লঞ্চ নাকি বিলাসবহুল চার তারকা হোটেল!
বিলাসবহুল চার তারকা হোটেলের আদলে তৈরি এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার বেলা পৌনে ২টার দিকে ঢাকার সদরঘাটে অত্যাধুনিক এ লঞ্চটির উদ্বোধন করেন নৌযান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদল, ভাইস চেয়ারম্যান রুমি কিসলু, ভাইস চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ, ডলার ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক আবুল কালাম খান ছাড়াও সংস্থার বেশ কয়েকজন নেতা। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে এ লঞ্চটি চলাচল করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মাহবুব উদ্দিন আহমদ বলেন, ঈদের সময় নৌপথে যাত্রীদের অনেক চাপ থাকে। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে অত্যাধুনিক এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চটি যুক্ত হওয়ায় ঈদুল আজহার সময় যাত্রীদের বাড়তি চাপ অনেকটা কমে আসবে। নৌপথে এ ধরনের বিলাসবহুল অত্যাধুনিক লঞ্চ চালুর জন্য এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চের মালিক আবুল কালাম খানকে অভিনন্দন জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে লঞ্চের ভেতরে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চের মালিক পক্ষ জানায়, লঞ্চটি গত ঈদুল ফিতরের আগে উদ্বোধনের কথা ছিল। তবে সাজসজ্জা ও ডেকোরেশনের কিছু কাজ বাকি থাকায় তখন উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। এখন লঞ্চটি শতভাগ প্রস্তুত যাত্রী পরিবহনের জন্য।
এরই মধ্যে ইঞ্জিন পরীক্ষার জন্য বুড়িগঙ্গা নদীসহ বিভিন্ন নদীতে ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় লঞ্চটি চালিয়ে দেখা হয়েছে। কোনো ত্রুটি ছাড়াই সব পরীক্ষায় উৎরে গেছে লঞ্চটি।
৩১ জুলাই থেকে নিয়মিত ঢাকা-বরিশাল নৌপথে যাত্রী পরিবহন করবে লঞ্চটি। ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পরদিন ১ আগস্ট বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে লঞ্চটিতে রয়েছে বিনোদন স্পেস, কিডস জোন, বড় পর্দার টিভি, দেশ-বিদেশের চ্যানেল দেখতে ডিশ অ্যান্টেনা, অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, ইন্টারকম যোগাযোগের ব্যবস্থা, রেস্টুরেন্ট, উন্মুক্ত ওয়াইফাই সুবিধাসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা। সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো চারতলায় ওঠার জন্য দুটি সিঁড়ি। সিঁড়ির ধাপগুলোর ভেতরের দিকে যুক্ত করা হয়েছে এলইডি প্যানেল।
বরিশাল-ঢাকা নদীপথে যাত্রীদের যাত্রা আরও আরামদায়ক করতে বিলাসবহুল এ লঞ্চটি নির্মাণ করেছে দেশের অন্যতম নৌযান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডলার ট্রেডিং কর্পোরেশন। এনিয়ে ডলার ট্রেডিং কর্পোরেশনের লঞ্চের সংখ্যা দাঁড়ালো চার এ।
এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চটির নির্মাণকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা মো. পলাশ জানান, বিশেষজ্ঞ নৌস্থপতির নকশায় সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্রকৌশলীদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চের নির্মাণকাজ চলে।
সমুদ্রগামী বড় জাহাজের আদলে তৈরি এই নৌযানটি লোয়ার ডেক, আপার ডেক ও দেড় শতাধিক কেবিন মিলিয়ে দেড় হাজারেরও বেশি যাত্রী ধারণ করতে পারবে। এছাড়া চারতলা এ লঞ্চটিতে পাঁচ শতাধিক টন পণ্য পরিবহনের সুবিধাও রয়েছে।
কুয়াকাটা-২ লঞ্চের মালিক আবুল কালাম খান বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় লঞ্চটিতে থাকবে একজন কমান্ডারসহ সশস্ত্র আনসার সদস্য। এছাড়া পুরো লঞ্চটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) আওতাভুক্ত। আধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত লাইফ বয়া রাখা হয়েছে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য।
এফএ/এমকেএইচ