কয়লা গায়েব : সাবেক ৭ এমডিসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার কয়লা আত্মসাতের ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ৭ এমডিসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১২টায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শামছুল দিনাজপুর সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আজিজ আহমদ ভূঞার আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করা হয়।
দিনাজপুর সমন্বিত জেলা দুদকের উপ-পরিচালক আবু হেনা আশিকুরর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তে এজাহারভুক্ত ১৯ আসামির মধ্যে পাঁচজনের অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদের অভিযোগপত্রে রাখা হয়নি। ঘটনার সঙ্গে নতুন করে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় মামলায় আরও নয়জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
চার্জশিটে অভিযুক্ত ২৩ আসামির মধ্যে মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ খান, খুরশীদুল হাসান, কামরুজ্জামান, মো. আমিনুজ্জামান, এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও হাবিব উদ্দিন আহাম্মদ বিভিন্ন সময়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির এমডির দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া অভিযোগপত্রে কোম্পানির সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. শরিফুল আলম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. আবুল কাসেম প্রধানীয়া, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন বিভাগ) আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (মেন্টেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা শাখা) সৈয়দ ইমান হাসান, উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মেন্টেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. মোর্শেদুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) মো. জাহেদুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মন, মো. মনিরুজ্জামান, ব্যবস্থাপক (কোন হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. শোয়েবুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর ডিপার্টমেন্ট) এ কে এম খালেদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) মো. জোবায়ের আলীকেও অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে।
অভিযোগ থেকে যে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- ব্যবস্থাপক (কোম্পানির প্ল্যানিং অ্যান্ড এক্সপ্লোরেশন বিভাগ) মো. মোশারফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেনটেইনেন্স) জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (সেইফটি ম্যানেজমেন্ট) মো. একরামুল হক, মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) গোপাল চন্দ্র সাহা এবং সাবেক মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) মো. আব্দুল মান্নান পাটওয়ারী।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ওই কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকা আত্মসাৎ করেন।
এমদাদুল হক মিলন/এমবিআর/এমএস