ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সোনাদিয়ায় ৩০ লাখ গাছ লাগাবে বেজা

জেলা প্রতিনিধি | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৯

কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া উপদ্বীপকে আন্তর্জাতিক মানের ইকো-ট্যুরিজম পার্কে পরিণত করার লক্ষ্যে বৃক্ষ রোপন শুরু হয়েছে।

উপকূলীয় এলাকার শিল্পাঞ্চলে ঝাউগাছ লাগানো এবং কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ বন তৈরির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সব অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট ১৫ লাখ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখ গাছ রোপনের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বিকেলে বেজার আয়োজনে ও সিটি ব্যাংকের সহযোগিতায় শুরু হওয়া এই বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরুয়াসু ইজুমি, বেজা চেয়ারম্যান প্রবন চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য মো. আয়ুব, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তাফা, মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফ বাদশা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামিরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংগ্যাজাই মারমা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর, কুতুবজোম ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকন, উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্ক মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া, বিজয় একাত্তর ও সমুদ্র বিলাস মৌজায় অবস্থিত। মোট জমির পরিমাণ ৯ হাজার ৪৬৭ একর। পার্কটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও নয়ানাভিরাম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে বেজা। সোনাদিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অক্ষুন্ন রেখে সংরক্ষিত বনকে আরও প্রসারিত করে শুধুমাত্র ৩০০ একর জায়গা জুড়ে ইকোট্যুরিজম পার্কটিকে গড়ে তোলা হবে।

বেজা সূত্র জানায়, সোনাদিয়ায় ইকো-ট্যুরিজম পার্ক প্রতিষ্ঠা করতে বেজা ইতোমধ্যে মাষ্টার প্ল্যান প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভারতের মাহিন্দ্রা কনসালটেন্টকে নিয়োগ দিয়েছে। পার্কটিকে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে ৩০ শতাংশ জায়গা ব্যবহার করা হবে।

এলাকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা, উন্নয়ন ও পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে কাজ করছে বেজা। পাশাপাশি দ্বীপে বসবাসরত ৩১৫টি পরিবারের পুনর্বাসনেও পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে নির্বাচন করা হয়েছে পুনর্বাসনের স্থান।

এদিকে সোনাদিয়া দ্বীপে নতুন করে যাতে কোনো মৎস্য ঘের ও অবৈধ বসতি গড়ে না উঠে সে বিষয়টি নিশ্চিতকল্পে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। দ্বীপ রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। দ্বীপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড। এজন্য তাদের স্থাপনা নির্মাণে জমি বরাদ্ধ দেয়া হচ্ছে।

tree

সোনাদিয়ায় জীব-বৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন রেখে পরিবেশ-বান্ধব ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তুলতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। দ্বীপের উপকূলীয় অংশে ঝাউবন সৃজনের কাজ চলমান। সুপের পানির নিশ্চিতকল্পে ব্যবস্থা নিচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। অবৈধ দখল বন্ধে পুলিশ ক্যাম্প ও সশস্ত্র আনসার নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্ক হবে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এক স্বর্গ রাজ্য। যেখানে থাকবে সবুজের সমারহ, কাঁকড়া ও কচ্ছপের জন্য পৃথক জোন। সেখানে সাধারণ জনগণের প্রবেশের কোনো সুযোগ থাকবে না। দ্বীপের জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণসহ আরও সমৃদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের মূল শর্ত অনুযায়ী বৃক্ষরোপনের ফলে জীব বৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি ভূমি রক্ষা হবে। সরকার দ্বীপভিত্তিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ডেল্টা প্ল্যানের অধীনে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। তাই জীব-বৈচিত্র্য এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা অপরিবর্তিত রেখে দ্বীপবাসীর জীবন ও জীবিকার সংস্থান করতে ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক তারই প্রতিফলন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে জেলা প্রশাসক মো. আফসারুল আফসার, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, বন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হক মাহবুব মোর্শেদ, পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী, সওজ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পরিবেশ অধিদফতর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, জেলা প্রশাসন, সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সিটি ব্যাংকের প্রতিনিধিসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সায়ীদ আলমগীর/এমএমজেড/জেআইএম

আরও পড়ুন