ঘুরতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার ৪ বন্ধু, পিকআপে আগুন
বগুড়ার গাবতলীতে ছেলেধরা সন্দেহে চার যুবককে গণপিটুনি দিয়ে তাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপভ্যান পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।
খবর পেয়ে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী, সহকারী পুলিশ সুপার (গাবতলী সার্কেল) সাবিনা ইয়াসমীন ও গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে চার যুবককে উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ে। এ সময় জনতার ইটপাটকেলে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার দুর্গাহাটা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে একটি স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই চার যুবক দুর্গাহাটা মাদরাসা ও ইউনিয়ন পরিষদের পূর্বপাশে একটি কেজি স্কুলের সামনে ঘোরাঘুরি করছিল। স্থানীয় লোকজন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা এলোমেলো কথা বলে। তখন লোকজন ওই চার যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর শুরু করে। মুহূর্তেই শত শত উৎসুক জনতা সেখানে হাজির হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় জনতা তাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মিঠু ওই চার যুবককে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের রুমে আটকে রাখেন।
এরা হলেন গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের কর্ণিপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে ফাহিম প্রামাণিক (২৪), পারধুনট মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে লুৎফর রহমান (৩৫), ধুনট জোড়শিমুল গ্রামের নজির হোসেনের ছেলে নিয়ামুল হোসেন (৩৬) ও তার ভাই দুলাল হোসেন (২২)।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, ওই চার যুবক সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীতে বেড়াতে গিয়েছিল। বেড়ানো শেষে তারা গাবতলীর দুর্গাহাটা মাঝিপাড়া গ্রামে বন্ধু বোরহানের সঙ্গে দেখা করতে যায়। এ সময় জাকিরুল তার বন্ধুদের দুর্গাহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অপেক্ষা করতে বলেন। কথামতো পরিষদের সামনে তারা অপেক্ষা করছিল। তখন জনগণ তাদের ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপভ্যান আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
গাবতলী থানার ওসি সেলিম হোসেন জানান, অতি উৎসাহী কিছু গ্রামবাসী না বুঝে এ হামলার ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
লিমন বাসার/এমবিআর/এমএস