টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
টাঙ্গাইলে কোথাও পানি কমছে আবার কোথাও বেড়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। এখন পর্যন্ত জেলার বড় তিনটি নদীর পানিই রয়েছে বিপৎসীমার ওপরে।
রোববার (২১ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি বিপসীমার উপরে থাকলেও গতকালের পানি পরিমাপের চেয়ে কমে এখন বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার। বিপৎসীমার নিচে রয়েছে পুংলী ও বংশাই নদী। এছাড়া ঝিনাই নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধলেশ্বরী নদীতে পানি ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শনিবার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ৬টি উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের প্রায় ১১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ জেলার বন্যা আক্রান্তে রয়েছে টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুর, ও মির্জাপুর। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৫৬ হাজার ৯৭১টি পরিবারের ২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭ মানুষ। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে প্রায় ১ হাজার ৩৩০টি পরিবারের মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ২১ হাজার ৯৭৪টি পরিবারের আংশিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে।
এছাড়া ভূঞাপুর উপজেলার ১৬টি কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ২ হাজার ৪শ মানুষ। অপরদিকে বন্যার পানি প্রবেশ করায় স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা মিলিয়ে অন্তত ৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্যার ফলে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৮ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। ১৪৫ কিলোমিটার কাঁচা ও ১ কি.মি.পাকা সড়কসহ ৪টি ব্রিজ কালভার্টের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া যমুনায় পানি বৃদ্ধি আর স্রোতে ভেঙেছে ভূঞাপুর-তারাকান্দি বাঁধের অজুনা ইউনিয়নের তারাই অংশে ১০০ ফুট ও ভূঞাপুর পৌরসভার অংশে ১০০ ফুট। যা বর্তমানে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মেরামত করা হচ্ছে। বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছে ৩৯টি মেডিকেল টিম।
এদিকে জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী বন্যায় ৬ হাজার ৬শ ৪৯ হেক্টর ফসলি জমি এবং সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ২০ হেক্টর বোনা আমন জমি, ৩০৫ হেক্টর রোপা আমন (বীজতলা), ১৩৫ হেক্টর রোপা আমন (আবাদ), ১ হাজার ২৮৩ হেক্টর আউশ, ৬৩৯ হেক্টর বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ২৬৭ হেক্টর জমির পাট পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
পানি পরিমাপের তথ্যটি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, রোববার সকালে যমুনা নদীর পানি কমলেও বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ব্রিজ এলাকায় বিপৎসীমার ১৪১ সে.মি. এবং ঝিনাই নদীর কালিহাতী উপজেলার যোকারচর এলাকায় বিপদসীমার ৭৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বিপৎসীমার নিচে রয়েছে পুংলী ও বংশাই নদী।
আরিফ উর রহমান টগর/এমএসএইচ