ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ইউএনওর নম্বর ক্লোন করে টাকা আদায়

জেলা প্রতিনিধি | নওগাঁ | প্রকাশিত: ১১:১০ এএম, ২১ জুলাই ২০১৯

নওগাঁর মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খন্দকার মুশফিকুর রহমানের অফিসিয়াল মুঠোফোন নম্বর (সরকারি নম্বর) ক্লোন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই নম্বর থেকে একাধিক শিক্ষককে ল্যাপটপ দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চার শিক্ষক থানায় অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, একটি অসাধু চক্র মান্দার ইউএনওর অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে শুক্রবার সন্ধ্যার পর একাধিক শিক্ষককে কল দেয়। তাদের বলা হয় ইউএনও অফিসে কয়েকটি ল্যাপটপ অতিরিক্ত আছে। সেগুলো আনতে কিছু টাকা খরচ হয়েছে। ল্যাপটপ বিতরণের জন্য কয়েক জন শিক্ষকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে, নিতে হলে কিছু টাকা দিতে হবে। সে কথা বিশ্বাস করে সাত শিক্ষক প্রত্যেকে ৭ হাজার টাকা করে ৫৯ হাজার টাকা ‘ইউএনওর’ (প্রতারকের) ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করেন। এরপর শনিবার (২০ জুলাই) বিকেলে ল্যাপটপ নিতে শিক্ষকদের অফিসে যেতে বলা হয়। বিকেলে কয়েক জন শিক্ষক ইউএনও অফিসে গেলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

বিষয়টি নিয়ে ইউএনও তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে শনিবার বিকেল ৩টা ৪৮ মিনিটে ‘মান্দা ইউএনও এর অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন টিচারকে ফোন দিয়ে ল্যাপটপের লোভ দেখিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। প্রতারকদের ব্যাপারে সাবধান থাকুন’ এমনি একটি সর্তকতামূলক পোষ্ট দেন।

আলালপুর হাজী শেখ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ইউএনও স্যারের মোবাইল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে ল্যাপটপ দেয়ার কথা বলা হয়। সরকারি নম্বর দিয়ে সব কথা বলা যায় না, এজন্য ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ফোন দেয় এবং ৭ হাজার টাকা ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করতে বলা হয়।’

Manda-Uno.jpg

তিনি বলেন, ‘আগে থেকে স্যারের সরকারি নম্বর আমার ফোনে সেভ করাছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত নম্বর ছিল না। তাই সরকারি নম্বরের কথা বিশ্বাস করে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করি। এরপর পরদিন (শনিবার) বিকেল ৪টার দিকে ইউএনও অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী শনিবার বিকেলে অফিসে ল্যাপটপ নিতে গেলে ইউএনও স্যার বলেন এ ধরনের কোনো বিষয় তার জানা নেই। তারপর তিনি প্রত্যারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। ঘটনায় ভুক্তভোগী চার শিক্ষক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।’

আইওরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, গত শুক্রবার রাতে ইউএনও স্যারের নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তাকে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলা হয়। টাকার বিষয় নিয়ে প্রথমে হতচকিত হয়ে পড়েন। স্যারের নম্বর থেকে ফোন করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিছু সময় পর স্যারকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমিতো ফোন কারিনি’।

এ ব্যাপারে ইউএনও খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন শিক্ষককে ফোন দিয়ে ল্যাপটপের লোভ দেখিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে। একটি অসাধু চক্র স্বার্থ হাসিলের জন্য এমনটি করেছে।’

এ বিষয়ে তিনি সবাইকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেন।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষকরা থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

আব্বাস আলী/এমএমজেড/এমএস

আরও পড়ুন