নড়িয়া-জাজিরা সড়কে পানি, যান চলাচল বন্ধ
শরীয়তপুরে পদ্মা নদীতে পানি আরও বেড়েছে। গত ১০ দিনে পানি ১৪০ সেন্টি মিটার বৃদ্ধি পেয়ে নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে শুক্রবার থেকে ৪৪০ সেন্টিমিটার গভীরতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার কম।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নড়িয়া-জাজিরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই সড়কের পাচুখারকান্দি এলাকায় বিকল্প সড়ক ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।
পদ্মায় স্রোত বাড়ায় নড়িয়ার নওপাড়ার মুন্সিকান্দি গ্রামে অস্থায়ীভাবে তীর রক্ষা কাজের ১০০ মিটার অংশ ধসে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার পদ্মা নদীর পানি নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে ৪৪০ সেন্টিমিটার গভীরতায় প্রবাহিত হয়েছে। সেখানে বিপৎসীমা হচ্ছে ৪৪৫ সেন্টিমিটার। গত ১০ দিনে পদ্মার ওই পয়েন্টে পানি বেড়েছে ১৪০ সেন্টিমিটার।
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে নড়িয়ার মোক্তারেরচর, চরআত্রা, নওপাড়া, জাজিরার বিলাশপুর, বড়কান্দি, পালেরচর, ভেদরগঞ্জের কাঁচিকাটা এবং তারাবুনিয়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ফসলি জমি, কাঁচা-পাকা সড়ক ও বসত বাড়ির উঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।
নড়িয়া-জাজিরা সড়কের শেহের আলী মাদবরকান্দি, পাচুখারকান্দি এলাকায় পানি উঠেছে। ওই সড়কের পাচুখারকান্দি এলাকায় একটি সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য তৈরি বিকল্প সড়কটি ভেঙে গেছে। ফলে ওই সড়কে বৃহস্পতিবার থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানি ঢুকেছে লোকালয়ে।
নওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ আজগর সোহেল মুন্সি বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে তীব্র স্রোত রয়েছে। ফলে ভাঙন রোধে নদীর তীরে ফেলা বালু ভর্তি জিও ব্যাগ তলিয়ে যাচ্ছে। অন্তত ১০০ মিটার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। বালুর বস্তা তলিয়ে যাওয়ায় ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
নড়িয়া-জাজিরা সড়কের অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ৮-১০ দিন যাবৎ পদ্মায় পানি বাড়ছে। পাচুখারকান্দি এলাকার বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওই স্থান দিয়ে পায়ে হেঁটেও চলাচল করা যাচ্ছে না। পানি লোকালয়ে ঢুকেছে।
এদিকে পানি বাড়ায় নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। সিসি ব্লক নির্মাণ ইয়ার্ড পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বুধবার থেকে সিসি ব্লক নির্মাণ বন্ধ রয়েছে। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে জিও ব্যাগ ফেলা ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।
জানতে চাইলে পাউবোর নিবার্হী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, নদীতে পানি বাড়ায় প্রকল্প এলাকার বেশ কিছু স্থানে তীর তলিয়ে গেছে। ওই সব স্থানে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। আর তীব্র স্রোত থাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে সমস্যা হচ্ছে। যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেখানেই তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মামুন উল হাসান বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে তা বন্যার পর্যায় আসেনি। আমরা বন্যা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সভা করা হয়েছে। সবাইকে সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার জন্য নিদের্শ দেয়া হয়েছে।
মো. ছগির হোসেন/এমএমজেড/এমকেএইচ