শ্বশুরের আত্মহত্যা, জামাই-শাশুড়িকে আটকে রেখেছে গ্রামবাসী
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জামাই-শাশুড়ির প্রেমের সম্পর্কের কারণে শ্বশুর আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জামাই ও শাশুড়িকে আটকে রেখেছে গ্রামবাসী। বুধবার রাতে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন শ্বশুর আসাদুল ইসলাম (৪২)। তিনি উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরচাদা গ্রামের সবের আলী মন্ডলের ছেলে।
এ ঘটনায় নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করেছেন জামাই বিল্লাল হোসেন (২২) ও শাশুড়ি সুফিয়া খাতুন (৩৬)। এ দিকে জামাই-শাশুড়ির প্রেমের সম্পর্কের কারণে শ্বশুর আত্মহত্যা করেছে- এমন খবর বৃহস্পতিবার রাত থেকে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও পুলিশ বলছে তাদের কাছে কেউ এমন কোনো অভিযোগ দেয়নি।
প্রতিবেশীরা জানান, গত ৪ মাস আগে আসাদুল ইসলামের মেয়ে সুমিতা খাতুনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী শালিখা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের বিয়ে হয়। কিছুদিন পরেই সুমিতার মা সুফিয়া খাতুনের সঙ্গে বিল্লালের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রতিবেশীদের চোখে জামাই-শাশুড়ির চলাফেরা ও অন্যন্য কর্মকাণ্ড আপত্তিকর বলে মনে হয়। এর প্রভাব পড়ে আসাদুলের পরিবারেও। এ বিষয় নিয়ে প্রায়ই আসাদুল ও সুফিয়ার মধ্যে বাগবিতণ্ডা হতো। তাদের ঝগড়া বিবাদে আশপাশের মানুষও অতিষ্ঠ ছিল। ওই বিষয় নিয়েই বুধবার দুপুরে আসাদুল ও সুফিয়ার মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়ার পরে আসাদুল পার্শ্ববর্তী মাঠে গিয়ে কীটনাশক পান করে। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরচাদা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল গনি জানান, গ্রামবাসী ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ জামাই বিল্লাল হোসেন ও সুফিয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের কারণে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন আসাদুল। আসাদুল মারা যাওয়ার পর জামাই বিল্লাল হোসেন ও শাশুড়ি সুফিয়াকে গ্রামবাসী একটি ঘরে আটকে রেখেছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগের বিষয়ে জামাই বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমার বিয়ে হয়েছে মাত্র ৪ মাস হলো। আমি মটর গাড়িতে কাজ করি। আমার নতুন বউ। সব সাজানো নাটক এবং গ্রামবাসী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ রনি লস্কর জানান, পারিবারিক কলহে আশাদুল কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে এটা তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। আবার জামাই-শাশুড়ির প্রেমের সম্পর্কের কথা গ্রামবাসী বলাবলি করছে বলে তিনি শুনেছেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম জানান, মহেশরচাদা গ্রামে একজন আত্মহত্যা করেছে এমন অভিযোগ তারা পেয়েছেন। কিন্ত জামাই-শাশুড়ির প্রেমের সম্পর্কের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বা কেউ জামাই-শাশুড়িকে আটকে রেখেছে এমন অভিযোগ তারা পাননি।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/আরএআর/এমএস