যার হাতে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছিল সে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পায় : ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এরশাদের সময়ই এদেশের গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছিল। যার হাতে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছিল সে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পায়। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে কারাগারে থাকতে হয়। এ অবস্থায় আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, অধিকার আদায়ে ঘুরে দাঁড়াবার কোনো বিকল্প নেই।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল নগরীর বান্দ রোডের ঈদগাহ ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না। সরকারি কর্মচারীদের কাঁধে ভর করে এ সরকার টিকে থাকতে চায়। আইনিপন্থায় সরকারের বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা কথায় কথায় উন্নয়নের ঢোল বাজাচ্ছেন। কিন্তু মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারছেন না। এখন আদালতের এজলাসেও মানুষ খুন হয়। প্রশাসনকে পকেটে ঢুকিয়ে সরকার দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাই সময় এসেছে আন্দোলন করার। গ্রামে গ্রামে গিয়ে সরকারের অন্যায়-অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানুষকে সংগঠিত করতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ ভোট দিতে পারলে আর কোনো দিন নৌকার পক্ষে তারা রায় দেবেন না। এ সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ ভোট দিয়েছে কি-না প্রশ্ন রাখেন। উত্তর আসে কেউ ভোট দিতে যাননি।
তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা গ্রামে গ্রামে যান। মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করুন।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এখনও সময় আছে চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে বের করুন। তিনি নির্বাচন কমিশন বাতিল করে তা পুনর্গঠনেরও দাবি জানান।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেন, মিছিল-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করা যাবে না। তিনি আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বীর বিক্রম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহবুবুল আলম নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশারফ হোসেন, হাফিজ ইব্রাহিম, এ কে এম রহমত উল্লাহ, হাসান মামুন, আবুল হোসেন খান, বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন এবং বিভাগের ৬ জেলার নেতৃবৃন্দ।
সাইফ আমীন/এমবিআর/এমকেএইচ