ফুল-মিষ্টি নিয়ে কৃষক কন্যার বাসায় হাজির এসআই
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়ের প্রতিশ্রুতিতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে দরিদ্র কৃষকের মেয়ে রেখা আক্তারের পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি হওয়ায় ফুল ও মিষ্টি দিয়ে অভিনন্দন জানালেন মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দয়াল চন্দ্র সরকার। বুধবার বিকেলে রেখা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান তিনি।
জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের কাটরা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আজাহার তালুকদারের মেয়ে রেখা আক্তার ১০০ টাকা খরচ করে পুলিশে চাকরি পান। চাকরিতে যোগদানের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে তার বাড়িতে যান মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক দয়াল চন্দ্র সরকার। এ সময় তিনি নিজ উদ্যোগে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং মিষ্টি মুখ করান।
দরিদ্র কৃষক আজাহার তালুকদারের চার মেয়ের মধ্যে রেখা আক্তার তৃতীয়। সম্প্রতি তিনি পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। এছাড়া এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
রেখা আক্তার জানান, দরিদ্র বাবার পক্ষে তাদের চার বোনের লেখাপড়ার খরচ বহন করা সম্ভব না হওয়ায় বড় দুই বোনকে অনেক আগেই বিয়ে দিয়েছেন। ছোট বোন ইতি আক্তার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। খুব কষ্ট করে বাবা-মা তাদের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। এ অবস্থায় চাকরিটা তার খুবই দরকার ছিল বলে জানান তিনি।
রেখা আক্তার বলেন, মাত্র ১০০ টাকায় আমার চাকরি হবে কল্পনাও করতে পারিনি। চাকরি পেয়ে আমি খুবই খুশি। চাকরিতে যোগদানের পর সৎভাবে দেশ ও জনগণের সেবা করতে চাই। সরকারি বেতন-ভাতা দিয়ে বাবা-মার ভরণ-পোষণ ও ছোট বোনকে লেখাপড়া করাবেন বলেও জানান তিনি।
১০০ টাকায় চাকরি পেয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রেখা আক্তার।
রেখার মা সখিনা বেগম বলেন, ‘আল্লাহ আমাগো গরিবের মুখের দিকে তাকাইছে। মেয়েটার পুলিশে চাকরি হইছে।’
তার বাবা আজাহার তালুকদার বলেন, ‘টিভিতে দেখি- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ টাকায় পুলিশে চাকরি দেবে। এরপর লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মেয়েকে টাঙ্গাইল পুলিশ মাঠে নিয়ে যাই। সেখানে মেয়ের যোগ্যতায় ১০০ টাকায় পুলিশের বড় স্যার আমার মেয়েকে চাকরি দিছে। আল্লাহ স্যারের ভালো করুক।’
এস এম এরশাদ/এমবিআর/এমকেএইচ