নুসরাতের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পেছাল
ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নে দায়ের করা মামলার চার্জগঠন পিছিয়ে ৫ আগস্ট ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ সময় আবেদন করলে অভিযোগ গঠনের দিন পেছান বিচারক।
বাদীপক্ষের কৌঁসুলি এম শাহজাহান সাজু বলেন, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির যৌন নিপীড়নের মামলার বুধবার অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনে অভিযোগ গঠনের তারিখ পিছিয়ে ৫ আগস্ট ধার্য করা হয়। এ সময় মামলার একমাত্র আসামি সিরাজ উদ-দৌলা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এম শাহজাহান সাজু বলেন, যৌন হয়রানির মামলাটি করার পর নুসরাত ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। সেই জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ২৭ মার্চ বেলা পৌনে ১১টার দিকে মাদরাসার পিয়ন নুরুল আমিনকে দিয়ে নুসরাতকে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে ডেকে পাঠানো হয়। তার সঙ্গে তার দুই বান্ধবী নাসরিন সুলতানা ও নিশাত সুলতানাও অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে যায়। এ সময় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা নুসরাতের দুই বান্ধবীকে ভেতরে ঢুকতে দেননি। নুসরাত একাই অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকেন। তখন নুসরাতের গায়ে হাত দেয়াসহ তাকে যৌন নিপীড়ন করেন অধ্যক্ষ সিরাজ। একপর্যায়ে নুসরাত কাঁদতে কাঁদতে অধ্যক্ষের রুম থেকে বের হয়ে ক্লাসে ফিরে যান।
এর আগে ৩ জুলাই বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। বিচারক মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করেন।
ঘটনার দিন ২৭ মার্চ নুসরাতের মা শিরিন আক্তার সোনাগাজী মডেল থানায় বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে আসামি করে মামলা করেন। ওই দিনই তাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনার পর থেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার সহযোগিতার নানাভাবে নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। তারা মামালা তুলে নিয়ে অস্বীকৃতি জানালে ৬ এপ্রিল নুসরাতকে কৌশলে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফেনী সদর হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। সেখানে ১০ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে নুসরাত মারা যান।
রাশেদুল হাসান/এএম/পিআর