এরশাদের জানাজা মাঠে জনস্রোত
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জানাজায় অংশ নিতে এবং তাকে শেষবারের মতো দেখতে জনস্রোতে পরিণত হয়েছে রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দান। দুপুর সোয়া ১২টায় মরদেহ আসার পর পরই পুলিশি বেষ্টনী ভেঙে মরদেহের কাছে ছুটতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে শুরু হয় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো। নিজ দলের নেতাকর্মী ছাড়াও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এসময় দলীয় নেতাকর্মীরা এরশাদের মরদেহ রংপুরে দাফনের জন্য স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায় তার মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার রংপুর সেনানিবাসে এসে পৌঁছায়। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে সকাল থেকেই জানাজা মাঠে উপস্থিত হতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বিশৃঙ্খলা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
জানাজায় ইমামতি করবেন রংপুর করিমিয়া নুরুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুহম্মদ ইদ্রিস আলী। তাকে সমাহিত করতে পল্লীনিবাসের লিচু বাগানে প্রস্তুত করা হয়েছে কবর। তবে দলের পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানাজা শেষে এরশাদের মরদেহ ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।
রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির দফতর সম্পাদক জাহিদ হোসেন লুসিড জানান, জানাজায় ও দাফন কার্যে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, জানাজা শেষে স্যারের (এরশাদ) মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পল্লীনিবাসে। সেখানে লিচুতলায় তাকে দাফন করা হবে।
রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির বলেন, এরশাদ স্যারের পল্লীনিবাসের ভেতরে গড়া পিতা মকবুল হোসেন মেমোরিয়াল ডায়াবেটিক হাসপাতলের লিচু বাগানের উত্তরপূর্ব পাশে সমাধির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (১৪ জুলাই) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। রোববার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় এবং বাদ আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
রংপুর ৩ (সদর) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি এ আসন থেকে টানা ছয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জিতু কবীর/আরএআর/জেআইএম