সিলেট নগরের ২০ এলাকা পানির নিচে
সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুরমা নদীর বৃদ্ধি পেয়ে নদীর পানি উপচে সিলেট নগরের প্রায় ২০টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার কালিঘাটও রয়েছে। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন নগরের কালিঘাট ও উপশহরের ব্যবসায়ীরা।
সিলেট জেলার নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবারও সিলেটের অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এর ফলে এখনও পানিবন্দি হয়ে আছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে।
সিলেট নগরের মিরাবাজারে জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল ও কলেজের সরকারি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখানে বিকেল পর্যন্ত ৮০টি বন্যা আক্রান্ত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সিলেট নগরী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত ৫০ হাজার নগরবাসী। পানিবন্দি হয়ে নগরের নিচু এলাকার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, নগরের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার কালিঘাট, শাহজালাল উপশহর, তেররতন, মেন্দিবাগ, যতরপুর, সোবহানিঘাট কাঁচাবাজার, মাছিমপুর, ছড়ারপার, চালিবন্দর, খরাদিপাড়া, ঘাসিটুলা, মোল্লাপাড়া, দক্ষিণ সুরমার হবিনন্দি, পাঠানপাড়া, আলমপুরের নিম্নাঞ্চলসহ ২০টি এলাকা তলিয়ে গেছে পানিতে। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষজন।
বিশেষ করে কালিঘাট এলাকায় বন্যার পানিতে বেশ কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা দোকানে পানি ঢুকে গেছে। ফলে কোটি টাকার চাল, আটা, ভুষি, পেয়াজ, রসুন আদাসহ নিত্যপণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক দোকান বন্ধ রয়েছে।
নগরে বন্যা কবলিতদের সিসিকের ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ প্রদান : সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরে বন্যায় কবলিত মানুষকে ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নগরের মীরাবাজার এলাকার শাহজালাল জামেয় ইসলামীয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সরকারিভাবে খোলা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া পরিবার সদস্যদের এ স্বস্থ্য সেবা দেয়া হয়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮০টি পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুদের এ সেবা প্রদান করে। এসময় সিসিকের স্বাস্থ্য শাখার কর্মকর্তা-কমচারীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনে এই স্বাস্থ্য ক্যাম্প অব্যাহত রাখা হবে।
জানা গেছে, সোমবারও সিলেটের বিভিন্নস্থানে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়েছে। উজানে ভারি বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে। এছাড়া আরও কয়েকটি এলাকায় নদী ভাঙনের শঙ্কাও রয়েছে। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের।
ছামির মাহমুদ/এমএএস/জেআইএম