ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নেত্রকোণায় তিন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি | নেত্রকোণা | প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, ১৪ জুলাই ২০১৯

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত ৬ দিনের টানা বৃষ্টিতে নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জেলার প্রধান নদী সোমেশ্বরী, কংস, ধনু ও উব্ধাখালিতে পানি বেড়ছে। এসব নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

এদিকে জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতভর বৃষ্টিতে কলমাকন্দায় নতুন করে আরও ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলায় মোট ৩৪৩টি গ্রামের মধ্যে ২৬২টির প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এছাড়া কলমাকান্দার সঙ্গে জেলা শহরের প্রধান সড়ক কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোণা গত দুদিন ধরে ডুবে থাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে রয়েছে। পানি প্রবেশ করায় এ উপজেলায় ১৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নেত্রকোণার জারিয়া কংস পয়েন্ট থেকে পানির মিটার গেজ রিডার আলমগীর হোসেন আজ (রোববার) সকাল ১০টার দিকে জানান, সেখানে পানি বিপৎসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার ও কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

দুর্গাপুরের গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কুল্লাগড়ায় সোমেশ্বরী নদী ভাঙন ধরেছে। এতে করে সমগ্র কুল্লাগড়া ইউনিয়ন হুমকিতে পড়েছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই উপজেলায় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

flood

বারহাট্টায় বাউশি, রায়পুর ইউনিয়নের পাশাপাশি নতুন করে প্লাবিত হয়েছে চিরাম, আসমা ও সাহতা ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম। ওই উপজেলায় ৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যায় গবাদি পশুর খাদ্য তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য চালসহ যে পরিমাণ শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, চাহিদার তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই তিন উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার পর্যন্ত ৫০ মেট্রিকটন চাল ও ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ প্যাকেট করে ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে বন্যায় এখন পর্যন্ত নেত্রকোণায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। নিজ নিজ কর্মস্থলে থেকে বন্যার্তদের সেবা দিতে স্থানীয় প্রশাসনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বন্যা কবলিত বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণে অংশ নিয়েছেন।

জেলা সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, বন্যার্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে এলাকায় মেডিকেল টিম ও স্বাস্থ্য সহকারীরা কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধও দেয়া হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিতদের মাঝে এ পর্যন্ত ৫০ মেট্রিকটন চাল ও ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরও ত্রাণ পাঠানো হবে। তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তিন উপজেলাতেই সহযোগিতার জন্য সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

কামাল হোসাইন/এমএমজেড/পিআর

আরও পড়ুন