কুড়িগ্রামে দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত
>> নৌ-ডাকাতি রোধে পুলিশের সতর্কতা
>> পানিবন্দী ৩০ হাজার মানুষ
>> বন্যার্তদের জন্য মজুত ১৫০ টন চাল
কুড়িগ্রামে টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বাড়ায় চরাঞ্চলের দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
শুক্রবার দুপুর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬ সে.মি ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ২ সে. মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে তিস্তা ও দুধকুমার নদীতেও। কুড়িগ্রামের নদ-নদী অববাহিকার চর-দ্বীপচরগুলোতে এমন সময়ে নৌ ডাকাতি প্রতিরোধসহ সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলার ১১টি থানা পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান। এ নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে টহল জোড়দার করেছে পুলিশ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ধরলার সেতু পয়েন্টে ও ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। তবে নদ-নদীর পানি বাড়লেও বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।
কুড়িগ্রাম সদরের চর যাত্রাপুরে গারুহারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার সবকটি চরের আমন বীজতলা, পাট, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে। নিচু এলাকার ঘর-বাড়ি ডুবে যাওয়ায় গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদ-নদীর ভাঙন তীব্ররূপ ধারণ করছে। ধরলার ভাঙনে সারডোব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ভাঙনের মুখে পড়েছে। চিলমারীর নয়ারহাট ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের কয়েকটি চরে নদী ভাঙনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, তার ইউনিয়নের বেশিরভাগই চরে পানি ঢুকেছে। এক হাজার পরিবারের ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর হাট সড়কের শুলকুর বাজার এলাকায় ধরলা নদীর পানিতে প্লাবিত হওয়ায় নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশের বাঁশের সাঁকো তলিয়ে গেছে। এতে কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওই ব্রিজ এলাকার মানুষজন নৌকায় পারাপার করলেও হাটে পণ্য আনানেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, বন্যা মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৫০ চন টাল, ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট উপজেলা পর্যায়ে বণ্টন করা হয়েছে। মজুদ আছে ১৫০ টন চাল ও ৩ লাখ টাকা।
জেডএ/পিআর