এতিম তিন ছেলে এখন পুলিশ
নেত্রকোনা সরকারি শিশু পরিবারের তিন ছেলে এখন পুলিশ পরিবারের সদস্য। জেলার এতিমদের একমাত্র আশ্রয়স্থল সরকারি শিশু পরিবার। ১৯৭৩ সালে সরকারি এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানে এই প্রথম তিনজন সদস্য সরকারি (পুলিশে) চাকরি পেল। পুলিশে চাকরি হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে পুরো শিশু পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা।
নিজেদের যোগ্যতায় বিনে পয়সায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া শিশু পরিবারের তিন সদস্য হলো- মো. আব্দুল মান্নান, মো. সাদেকুল রহমান ও মো. লিংকন মিয়া।
মান্নান নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ছবিলা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে, সাদেকুল সদর উপজেলার পূর্ব মেদনী গ্রামের মৃত সাদেক মিয়ার ছেলে ও লিংকন আটপাড়া উপজেলার বাউসা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে।
সরকারি শিশু (বালক) পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক তারেক হোসেন জানান, উৎকোচ ছাড়া শিশু পরিবারের তিন সদস্য চাকরি পাওয়ায় উপকৃত হয়েছেন তারা। ধসে যাওয়া তিনটি পরিবার আবার নতুনভাবে স্বপ্ন দেখতে পারবে। তাছাড়া শিশু পরিবারের সুনাম অর্জন হওয়ায় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তারা গর্ববোধ করছেন। স্বচ্ছভাবে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ তথা জেলা পুলিশ সুপারের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-তত্ত্বাবধায়ক তারেক।
কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়া শিশু পরিবারের সদস্য লিংকন, মান্নান ও সাদেকুল জানান, চাকরি পেয়ে তারা খুব আনন্দিত। এরই মধ্যে পুরনো দিনের দুঃখ কষ্ট ভুলে নতুন জীবনের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে তারা।
ডিপার্টমেন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী চাকরি জীবনে নিজেদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের সেবাদানে বদ্ধপরিকর থাকবে বলেও জানান পুলিশের নতুন এই সদস্যরা।
জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, শিশু পরিবারের তিন সদস্য নিজেদের মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন।শিশু পরিবারের সদস্য ছাড়াও বাকি ৭২ জনকে স্বচ্ছতার সঙ্গে চাকরি দেয়া হয়েছে। এবারের নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১০, পুলিশ কোটায় তিন, নারী কোটায় ১৭ জন ও বিভিন্ন পর্যায় থেকে ৪৫ জনকে নেয়া হয়েছে।
নতুন পুলিশ সদস্যরা নিজের দায়িত্ব যথাযথ পালন করে ভবিষ্যৎ দিনগুলোতে পরিচ্ছন্ন সমাজ গঠন ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
কামাল হোসাইন/এএম/পিআর