শ্রমিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকদের ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলন কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদসহ ১১ জন শ্রমিক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়োগের দাবিতে শ্রমিকদের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয়দিন রোববার বেলা ১১টার দিকে এ লাঠিচার্জ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
পুলিশের হাতে আটক অন্য শ্রমিক নেতারা হলেন- আরিফুল ইসলাম, মাজেদুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন, আব্দুল আজাদ, মমিনুল ইসলাম, মাজেদুল হক, জিয়াদুল হক ও শাহিনুর রহমান।
এদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটক শ্রমিক নেতাদের মুক্তির দাবি করে আবারও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শ্রমিকরা। পুলিশের লাঠিচার্জের পর আন্দোলরত শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। একই সঙ্গে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক অধিকার আন্দোলন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শাহাজান। এ সময় কমিটির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, আরিফ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফুলবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর আলমসহ অনান্য শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, রোববার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান ফটকের সামনে ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে হঠাৎ লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এতে কয়েকজন আহত হন এবং কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
শ্রমিক অধিকার আন্দোলন কমিটির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও আরিফ বলেন, শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি পূরণের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
তবে পুলিশ বলছে, আন্দোলনকারীদের বারবার অনুরোধ করেও সড়ক থেকে সরানো যায়নি। পরে তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আন্দোলনকারীরা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকালীন একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে উন্নয়নকাজ করেছিল। এখন উন্নয়নকাজ শেষ। আবার যখন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জনবল প্রয়োজন হবে তখন তাদের কাজে লাগানো হবে। এখন জনবলের প্রয়োজন নেই।
১১ জন শ্রমিক নেতাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়পুকুরিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সুলতান মাহমুদ বলেন, আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ের নামে ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। এতে করে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। জনদুর্ভোগ দূর করতে তাদের ধাওয়া দিয়েছে পুলিশ। ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বড়পুকুরিয়া বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটের উন্নয়নকাজের স্থানীয় অভিজ্ঞ শ্রমিকরা উৎপাদনকাজে কর্মী হিসেবে নিয়োগের দাবিতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি দেয়। এরই অংশ হিসেবে রোববার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান ফটকের সামনে ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
এমদাদুল হক মিলন/এএম/এমএস