রাতের আঁধারে বৃষ্টিতেই শেষ ৩১৬ কোটি টাকার কাজ
একদিকে বৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে রাত। এর মধ্যেও থেমে নেই সড়কের নির্মাণকাজ। সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা না থাকলেও তড়িঘড়ি করে শ্রমিকরা রাতের আঁধারে বৃষ্টিতেই চালিয়ে যাচ্ছেন নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ বিরিশিরি মহাসড়কের নির্মাণকাজ। রাতের আঁধারে বৃষ্টির মধ্যেই সড়কের ঢালাই কাজের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিও দেখে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
নেত্রকোনা সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের সাড়ে ৩৬ কিলোমিটার নির্মাণের জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ৩১৬ কোটি টাকা। প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এরপরও দায়সারাভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে এই সড়ক। রাতের আঁধারে বৃষ্টির মধ্যেই চলছে সড়কের ঢালাই। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। কারণ এই অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি ছিল দুর্গাপুর থেকে শ্যামগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে টেকসই সড়ক তৈরির লক্ষ্যে ৩১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে দুর্গাপুর-নাজিরপুর মোড়ে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে সড়কে পিচ ঢালাইয়ের কাজ করেন শ্রমিকরা। বিষয়টি দেখে জনমনে অসন্তোষ দেখা দেয়। সেই সঙ্গে রাতের আঁধারে বৃষ্টিতে সড়কের ঢালাই দেয়ার দৃশ্য ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন স্থানীয়রা। ওই ভিডিও দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, সড়কে কাজ শুরুর সময় থেকে নানা অনিয়মের জন্য প্রতিবাদ করে এলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। দায়সারাভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়নকাজ। একদিন ঢালাই চলে অন্যদিকে বৃষ্টিতে উঠে যায় পিচ।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তোবারক হোসেন খোকন বলেন, ৩১৬ কোটি টাকার কাজের শুরু থেকে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বার বার এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ঠিকাদার কিংবা সড়ক বিভাগের টনক নড়েনি। শুক্রবার রাতের আঁধারে বৃষ্টির মধ্যেই চলেছে সড়কের ঢালাইয়ের কাজ। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করেনি। কাজটির তদন্ত হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার বলেন, এই সড়কের কাজ শেষ হয়ে গেছে। সড়কটির নাজিরপুর মোড়ে একটু জায়গা বাকি ছিল। এই কাজটি শুক্রবার রাতে ঢালাই দেয়ার সময় বৃষ্টি শুরু হলে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। ঠিকাদারকে ওই স্থানটি পুনরায় করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কামাল হোসাইন/এএম/পিআর