শিশু শাহীনের ভ্যান ছিনতাই : আরও ৩ আসামি গ্রেফতার
সাতক্ষীরায় নৃশংসভাবে মাথা ফাঁটিয়ে শিশু শাহীনের মোটরভ্যান ছিনিতাইয়ের ঘটনায় অপর তিন আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার ভোর রাতে তাদের আটক করা হয়।
জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ইনটেলিজেন্স অফিসার মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শাহীনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা চালিয়ে ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনায় অপর তিন অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সুপার এ বিষয়ে পরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবেন।
এদিকে, এ ঘটনায় সোমবার সকালে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রাম থেকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নাইমুল ইসলাম নাইমকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তার স্বীকারোক্তি মতে সেদিন বিকেলে ভ্যানটি ক্রেতা ও ভ্যানের ব্যাটারি ক্রেতাকে আটক করে সাতক্ষীরা পুলিশ।
এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নাইমুল ইসলাম নাইম (২৪) কেশবপুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের বাবর আলী মোড়ল। ভ্যানটি কেনেন সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার আলাইপুর গ্রামের মৃত. ধোলাই পাড়ের ছেলে আরশাদ পাড় অরফে নুনু মিস্ত্রী (৬৫)। আর ভ্যানের চারটি ব্যাটারি কেনেন সাতক্ষীরা সদর থানার গোবিন্দকাটি গ্রামের মৃত. হামজের আলীর ছেলে বাকের আলী (৪৫)।
মঙ্গলবার বিকেলে পরিকল্পনাকারী নাইমুল ইসলাম নাইম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এর আগে সোমবার রাতে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান জানিয়েছিলেন, শিশু শাহীনের ওপর নৃশংস ঘটনাটি সাতক্ষীরা ও যশোর জেলা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে। টানা ৭২ ঘণ্টা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও ভ্যানটি উদ্ধারে একযোগে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, গত ২৭ মে প্রধান অভিযুক্ত নাইমুলসহ তিনজন গোপন মিটিং করে। নাইমুল মোবাইল থেকে ফোন দিয়ে বলে যে, আগামীকাল (২৮ জুন) সকালে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একটা ভাড়া রয়েছে। তুই সকালে কেশবপুর বাজারে চলে আসিস। একই সঙ্গে তারা ৩৫০ টাকা ভাড়া ঠিক করে। পরের দিন শুক্রবার সকালে নাইমের ফোন থেকে কল দিয়ে শাহীনকে কেশবপুর বাজারে আসতে বলে। শাহীন কেশবপুর বাজারে এসে দেখে নাইমুলসহ তিনজন গাজীরমোড়ে বসে আছে। এরপর তারা ভানে উঠে কেশবপুর হাসপাতালের সামনে দিয়ে সরসকাটি চৌগাছা হয়ে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া আমজামতলা মোড়ে ফাঁকা জায়গা দেখে শাহীনকে থামাতে বলে। শাহীন তখন ভ্যান থামায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরে তারা একত্রে ভ্যান থেকে নেমে শাহীনকে সেটি রেখে বাড়ি চলে যেতে বলে। এ কথা বাড়ি গিয়ে জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ সময় শাহীন ভ্যান দিতে রাজি না হলে তারা সবাই তা ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্যানের ছিটের উপরে লোহার সঙ্গে তার মাথা জোরে কয়েকবার আঘাত করে। এতে শাহীন অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পাট ক্ষেতে ফেলে রেখে চারজন ভ্যান নিয়ে সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা বাজারে এসে প্রথমে বাকের আলীর কাছে ভ্যানের চারটি ব্যাটারি ৬ হাজার ২৩৬ টাকায় বিক্রি করে। পরে সাতক্ষীরার কলারোয়া বাজারে গিয়ে মির্জাপর মোড়ে আরশাদ পাড় ওরফে নুনু মিস্ত্রির কাছে ভ্যানটি ৭ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে তারা টাকা ভাগ করে নিয়ে কেশবপুর নিজ বাড়িতে চলে যায়। এ ঘটনার সঙ্গে এখনো কয়েকজন জড়িত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাদের আটক করা হবে।
আকরামুল ইসলাম/এমএমজেড/জেআইএম