নবজাতকসহ প্রসূতিকে আটকে রাখলো ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ
পটুয়াখালীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের দাবিকৃত অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় নবজাতকসহ প্রসূতি মা লিমা বেগমকে (২১) আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার পটুয়াখালী সদরের হিমি পলি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নবজাতকসহ ওই প্রসূতি মাকে আটকে রাখে। লিমা বেগম সদর উপজেলার জৈনকাঠি মৃধা বাড়ির রিয়াজ মৃধার স্ত্রী।
রিয়াজ মৃধা বলেন, রোববার বিকেল ৪টার দিকে লিমার প্রসব বেদনা উঠলে হিমি পলি ক্লিনিকে নেয়া হয়। সেখানের চিকিৎসকরা জানান, সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে লিমার সন্তান প্রসব করাতে হবে। পরে লিমার সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ছয় হাজার টাকা চুক্তি করে হিমি পলি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান জন্ম দেয় লিমা।
তিনি আরও বলেন, লিমার নরমাল ডেলিভারি হওয়ায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ক্লিনিকের লোকজন প্রথমে বলে লিমার রক্ত লাগবে। পরে বলে ওষুধ লাগবে। এরপর বলে আজ ক্লিনিকে থাকতে হবে। ফলে ওই দিন ক্লিনিকে থেকে যাই আমরা। মঙ্গলবার সকালে ক্লিনিক থেকে নাম কেটে বাড়ি যাওয়ার জন্য ক্লিনিকের কাউন্টারে গেলে সিজারের ছয় হাজার টাকা দাবি করে কর্তৃপক্ষ।
তখন আমি কাউন্টারের লোকজনকে জানাই আমার স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন করতে হয়নি। নরমাল ডেলিভারিতে সন্তানের জন্ম হয়েছে। কিসের ছয় হাজার টাকা দেব আমরা। এ কথা বললে আমাদের আটকে রাখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ক্লিনিকের কাউন্টারের লোকজন জানায়, ছয় হাজার টাকা না দিলে আমাদের ছাড়পত্র তো দূরের কথা বাড়ি যেতে দেবে না। এ অবস্থায় উপায় না পেয়ে আমার মামাতো ভাই পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের অফিস সহকারী সোহেলকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। পরে প্রেস ক্লাবের লোকজনের অনুরোধে তিন হাজার টাকা রেখে আমাদের ছাড়পত্র দেয় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের অফিস সহকারী সোহেল বলেন, ‘আমি অফিসের সিনিয়র সাংবাদিকদের বিষয়টি জানানোর পর তারা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তিন হাজার টাকা রেখে রোগীকে ছেড়ে দেয় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিমি পলি ক্লিনিকের ম্যানেজার লিটন বলেন, প্রসূতি ও নবজাতককে আটকে রাখার কোনো ঘটনা ঘটেনি। রোগীর সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে আমি কাউন্টারে জানিয়েছি রোগী যত টাকা দিতে চায় তা রেখে রোগীকে ছেড়ে দাও।
এ বিষয়ে জানতে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন শাহ মোজাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
মহিব্বুল্লাহ চৌধুরী/এএম/পিআর