দুই রেল সেতুতে হেঁটে পারাপারের নিষেধাজ্ঞা মানছে না কেউ
ভৈরবে মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান রেলওয়ে সেতুসহ দুই রেল সেতু দিয়ে জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ হলেও তা মানছে না কেউ।
প্রতিদিন লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবাধে সেতু দুটি দিয়ে ভৈরব থেকে আশুগঞ্জ যাতায়াত করছেন। এভাবে চলাচলের কারণে এ পর্যন্ত সেতুর ওপর ও প্রবেশমুখে হত্যাকাণ্ডসহ প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
জানা যায়, পুরাতন মেঘনা হালিম রেল সেতু ও দ্বিতীয় জিল্লুর রহমান রেল সেতু দিয়ে জনসাধারণের হেঁটে পারাপার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেতুর দুই প্রান্তে কোনো প্রহরা না থাকায় দল বেঁধে ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করছে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন। এতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকই।
অপরদিকে একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র ব্রিজ দেখতে আসা দর্শণার্থী ও পথচারীদের জিম্মি করে লুটে নিচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র। তাদের হাতে অনেকেই আহত ও নিহত হওয়ারও ঘটনা ঘটছে।
এদিকে কেপিআইভুক্ত এলাকায় সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষ সেদিকে নজর দিচ্ছে না, শুধুমাত্র সাইনবোর্ড লাগিয়েই তারা নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
পথচারীরা বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলে কোনো বাধা না থাকায় আমরা নদীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে হেঁটেই চলাচল করি। কাউকে নিষেধ করতে দেখি না। আর সাইনবোর্ডের দিকে তাকানোর সময় নেই। আবার অনেকে লেখাপড়া জানে না বিধায় সাইনবোর্ডের গুরুত্বও বোঝেন না।
সেতু দুটির প্রবেশ মুখে বিনোদন প্রেমিরা বলেন, স্থানটিতে আসলে ভাল লাগে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাঝে মাঝেই এখানে কিছু সময় কাটিয়ে, ছবি তুলে আনন্দ উপভোগ করি। পুলিশের কেউ আসে না। যখন পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হবে তখন আর লোকজন এখানে আসবে না।
সেতু সংলগ্ন পুলিশ ক্যাম্পের এ এস আই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ভৈরব থানার অধীনে ৮ জন ব্রিজঘাট এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে আছি। সকাল ৮টা থেকে রাত রাত ১০টা পর্যন্ত এখানে পালাক্রমে ডিউটি করি।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, জায়গাটা কেপিআই এলাকা হিসেবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত। তাই ব্রিজের নিরাপত্তায় সেখানে আমাদের সদস্যরা দিন-রাত পাহারার দায়িত্ব পালন করছেন।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, রেল লাইনের ওপর ২৪ ঘণ্টা ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ব্রিজের ওপর দিয়ে মানুষের হাঁটাচলা সম্পূর্ণ বেআইনি ও নিষিদ্ধ। তারপরও মানুষ ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করে থাকে। এ কারণে আমাদের রেলওয়ে পুলিশ প্রায়ই অভিযান চালিয়ে সেতু এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে তাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, নিষেধ অমান্য করে কেপিআই এলাকায় চলাচলের কারণে অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ওই এলাকায় ছিনতাইকারীদের উৎপাত থাকে বেশি। বেশ কিছু ছিনতাইসহ হত্যাকাণ্ডও ঘটেছে ওই এলাকায়।
আসাদুজ্জামান ফারুক/এমএমজেড/জেআইএম