এক রেইনট্রি গাছের মূল্য ৬ লাখ ৯০ হাজার!
পটুয়াখালীর দুমকিতে পায়রা নদীর ওপর নির্মাণাধীন লেবুখালী সেতু প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে চরম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউনুস ফরাজীর একটি রেইনট্রি গাছের মূল্য ও ক্ষতিপূরণ বাবদ দাম ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
যদিও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন বর্তমান বাজারে গাছটির মূল্য কোনোভাবেই ৩৫ হাজার টাকার বেশি হবে না। অনুসন্ধানে জানা যায়, গাছটির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট, প্রস্থ ৭ ফুট হলেও পটুয়াখালীর সামাজিক বনায়ন নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট প্রস্থ ১১ ফুট নির্ধারণ করেছেন। প্রতি ঘনফুট কাঠের বাজারমূল্য ৬শ থেকে ৭শ টাকা হলেও তিনি দাম ধরেছেন ১৫শ টাকা। গাছটির দাম বাজার দরের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি ধরেছেন তিনি।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, সার্ভেয়ার এবং বনায়ন কর্মকর্তারা বিপুল টাকা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে গাছ এবং জমির মূল্য নির্ধারণ করেছেন।
শুধু তাই নয়, ইউপি সদস্য ইউনুস ফরাজীর জমিতে ৭০ হাজার টাকার বিলাতি গাবগাছের হিসাব দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিন মাত্র একটি গাছের সন্ধান পাওয়া যায়, যার বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা হতে পারে। এ ছাড়া আমগাছ ও তুলাগাছের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এসব গাছের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক বরাবর স্থানীয় বাসিন্দা তুহিন ফরাজী, শাজাহান ঘরামি, শহীদ ফরাজী ও হানিফ হাওলাদারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সার্ভেয়ার ও বনায়ন কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের ঘুষের মাধ্যমে এভাবে মূল্য নির্ধারণ করিয়েছেন ইউপি সদস্য।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ইউনুস ফরাজী জানান, অফিসাররা পরিদর্শন করে মূল্য নির্ধারণ করেছেন। এখানে আমার কী।
সার্ভেয়ার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আমরা শুধু সংখ্যা নির্ধারণ করেছি। গাছের মূল্য নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ।
সামাজিক বনায়ন ও নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম বলেন, অনেক বড় গাছ তো, তাই অনুমাননির্ভর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কাগজপত্র দেখে জানাতে পারবো।
গাছের সংখ্যা পরিবর্তনের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা সার্ভেয়াররা করেছে, আমি কিছুই জানি না।
মুহিবুল্লাহ চৌধুরী/আরএআর/এমকেএইচ