এক দুর্ঘটনায় ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল আনিকার
৫ বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন আনিকা আক্তার তাহসিন (২২)। বাবা-মা ও বোনদের স্বপ্ন ছিল আনিকা ডাক্তার হয়ে সমাজের জন্য কাজ করবে। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে পরিবারের সেই স্বপ্ন। ৫ মাস আগে আনিকার বাবা প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ মারা যান। সেই শোক না কাটতেই আবারও শোকের সাগরে ডুবেছে পরিবারটি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় রয়েল পরিবহনের একটি বাস খাদে পড়ে নিহত হন ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আনিকা। তিনি কুমিল্লা নগরীর ২য় মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত প্রকৌশলী মামুনুর রশিদের মেয়ে। ওই দুর্ঘটনায় আরও মারা যান রৌশন আরা (৫০) নামের এক গৃহবধূ।
রাতে আনিকার মরদেহ বাড়িতে আনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। মরদেহ দেখতে আনিকার আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠীসহ লোকজন ভিড় জমায়।
বাবা হারানোর ৫ মাসের মাথায় আদরের বোনকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ পুরো পরিবার। তার বড় বোন তানিয়া আল নিসা জানান, বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আনিকা একজন বড় ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবে। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা আমাদের পরিবারের সকল স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল।
আজ শুক্রবার বাদ জুম্মা এলাকায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা কুমিল্লাগামী রয়েল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জের টামটা এলাকায় আসার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি ডোবায় পড়ে যায়। এ সময় বাসে থাকা অন্তত ১২ যাত্রী আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল ছাত্রী আনিকা আক্তার তাহসিন (২২) ও জেলার বুড়িচং উপজেলার মিথিলাপুর গ্রামের মৃত সফিকুর রহমানের মেয়ে রৌশন আরাকে (৫০) মৃত ঘোষণা করেন।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম জানান, নিহত আনিকা আক্তার তাহসিন ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ছিলেন। এছাড়া আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কামাল উদ্দিন/এফএ/এমএস