ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সন্দ্বীপ ঘাটে প্রবাসীকে মেরে নদীতে ফেলে দিল বোটচালক

প্রকাশিত: ০৩:৩২ এএম, ২৮ জুন ২০১৯

চট্টগ্রামের কুমিরা ও সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া নৌপথে সার্ভিস বোট থেকে কূলে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত লালবোটে অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে উঠতে অস্বীকৃতি জানানোয় দুবাইফেরত দুই প্রবাসীসহ চার যাত্রীকে পিটিয়ে নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার ওই চার যাত্রী হলেন- মো. মানিক, মো. সোহেল, মো. শিবলু ও মো. শিহাদ। তারা সবাই সন্দ্বীপ মুছাপুরের আলীমিয়ার বাজার এলাকার মান্দিরগো বাড়ির বাসিন্দা ও সম্পর্কে সবাই আত্মীয়।

জানা যায়, দুবাইফেরত দুই প্রবাসী সোহেল ও শিবলু চট্টগ্রামের কুমিরা ঘাট থেকে সার্ভিস বোটে করে সন্দ্বীপ যাচ্ছিলেন। দুই প্রবাসীর মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাদের সঙ্গে ছিলেন। সন্দ্বীপের কূলে আসার পর ভাটার কারণে সার্ভিস বোট থেকে যাত্রীদের কূলে নামানোর জন্য আসা লালবোটে উঠাচ্ছিল। সঙ্গে ছোট বাচ্চা ও মহিলা থাকায় দুবাই প্রবাসী সোহেল অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় সেই বোটে উঠতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু বোটের চালক ও স্টাফরা তাকে নামতে জোরজবরদস্তি শুরু করে। সোহেল তাতেও অসম্মতি জানালে স্টাফদের একজন সোহেলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এর প্রতিবাদ করার পর স্টাফরা প্রথমে সোহেলকে ধাক্কা দিয়ে সার্ভিসবোট থেকে লালবোটে ফেলে দেয়।

পরে সেখানে তাকে বেধড়ক পেটায়। সোহেলকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার বাবা ও ছোট দুই ভাইকেও মারধর করে ঘাট ইজারাদারের লোকজন। এ সময় সার্ভিস বোটে থাকা যাত্রীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ইজারাদারের লোকজন লালবোট চালিয়ে সার্ভিস বোট থেকে দূরে সরে যায়। সেখানে ওই অবস্থায় আরেক দফা মারধর করে। পরে কূলের কাছাকাছি এলে একজন কর্মচারী প্রবাসী সোহলকে লাথি দিয়ে নদীতে ফেলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী আরাফাত রহমান সাব্বির বলেন, হঠাৎ করেই দেখি ঘাটের লোকজন মিলে লালবোটে ফেলে একজনকে মারছে। ওই লোককে বাঁচাতে ২/৩ জন সার্ভিস বোট থেকে লাফিয়ে লালবোটে নামে। সঙ্গে সঙ্গে তারা লালবোটটা সার্ভিস বোটের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়। কিছুদূর নিয়ে গিয়ে নৌকা থামিয়ে নদীর মাঝখানে তাদের আবার পেটানো হয়। পরে কূলে নিয়ে লাথি মেরে বোট থেকে ফেলে দেয়। তার মা-বোনসহ স্ত্রী ও মেয়ে ওই সময় সার্ভিস বোটে ছিল।

হামলার শিকার দুবাই প্রবাসী সোহেল বলেন, একটি লালবোটে ৬০ জনের বেশি যাত্রী নেয়ায় আমি উঠতে রাজি হইনি। এ জন্য ওরা আমাকে ও আমার ভাইদের মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। প্রবাসে বসে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুমিরা গুপ্তছড়া ঘাটে যাত্রীদের প্রতি অত্যাচার করার কথা শুনেছিলাম, আজ আমি নিজে প্রবাস থেকে দেশে এসে নিজে অত্যাচারের শিকার হলাম।

সোহেল আরও বলেন, আমরা প্রবাসীরা বাংলাদেশের মাটিতে নামলে এয়ারপোর্ট থেকে হয়রানির শিকার হতে শুরু করি, সরকার আমাদেরকে বলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা, দেশের অর্থনৈতিক চাকা নাকি আমরাই ঘুরাই, অথচ দেশে এলে আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই, ভাগ্য ভালো অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।

এ ঘটনায় কুমিরা গুপ্তছড়া ঘাটের ইজারাদার এসএম আনোয়ার হোসেন সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. শরিফুল আলম বলেন, গুপ্তছড়া ঘাটে যাত্রীদের ওপর হামলার একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।

বিএ