ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বরগুনার সেই খুনি আগেও কোপান প্রতিবেশীকে

জেলা প্রতিনিধি | বরগুনা | প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ২৭ জুন ২০১৯

বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যাকারীদের মধ্যে অন্যতম একজন রিফাত ফরাজী (২৫)। বরগুনা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি রোডের মো. দুলাল ফরাজীর বড় ছেলে তিনি।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা জানান, মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন ও ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে যুক্ত এই রিফাত ফরাজী। এ কারণে স্থানীয়দের কাছে একটি আতঙ্কের নাম রিফাত ফরাজী। রিফাতের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের ওপর হামলা, মারধর রিফাতের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এসব কারণে কয়েকবার গ্রেফতার হলেও অজ্ঞাত এক কারণে খুব স্বল্প সময়েই মুক্তি পান তিনি। ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় তরিকুল ইসলাম (২১) নামে এক প্রতিবেশীকে কুপিয়ে মারাত্মক যখম করেন রিফাত ফরাজী।

তরিকুল জানান, একদিন সামান্য কথা কাটাকাটি হয় রিফাত ফরাজীর সঙ্গে তার। তখন রিফাত ফরাজী তাকে কুপিয়ে যখম করার হুমকি দেন। রিফাত ফরাজীর ভয়ে তিনি দেড় মাস রিফাত ফরাজীর বাসার সামনে দিয়ে না গিয়ে আধা কিলোমিটার পথ ঘুরে তার বাসায় যাওয়া আসা করতেন। হুমকি দেয়ার দেড় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন সন্ধ্যায় রিফাত ফরাজীর বাসার সামনে দিয়ে তরিকুল তার বাসায় যাওয়ার পথে রিফাত ফরাজী দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার মাথায় গুরুতর যখম করেন। এ ঘটনায় তরিকুলের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

একই বছর রিফাত বরগুনার ডিকেপি রোডের বাসার ছাত্র মেসে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে বাসায় থাকা সব ছাত্রদের জিম্মি করে, তাদের ১৪টি মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ রিফাতের বাবা দুলাল ফরাজীকে আটক করে মোবাইলগুলো উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিকেপি রোডের এক বাসিন্দা বলেন, ‘ডিকেপি রোডের আমাদের ভাড়া দেয়া বরগুনা পলিট্যাকনিক ইনিস্টিটিউটের মেসে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে ১৪টি মোবাইল ছিনতাই করেন রিফাত ফরাজী। এ ঘটনা জানার পর আমি বরগুনা সদর থানায় গিয়ে অভিযোগ করায় রিফাত ফরাজীর বাবা দুলাল ফরাজীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তিনি রিফাতের কাছ থেকে ছিনতাই করা ১৪টি মোবাইলের মধ্যে ১১টি উদ্ধার করেন। আর বাকি তিনটি মোবাইল উদ্ধার করতে না পেরে নতুন মোবাইল কিনে দিয়ে থানা থেকে মুক্তি পান।’

বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মারজানা মনি বলেন, ‘২০১৭ সালের রমজানে আমার একমাত্র ছোট ভাই হাফেজ মো. মেহেদী হাসান বরগুনার হোমিও চিকিৎসক আলাউদ্দিন ডাক্তারের বাসা সংলগ্ন মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ায়। তখন রিফাত ফরাজী একদিন মেহেদীর কাছ থেকে স্যামস্যাং গ্যালাক্সি কোর প্রাইম মডেলের বিদেশ থেকে আনা একটি ফোন ছিনিয়ে নেন। বিষয়টি রিফাত ফরাজীর মা-বাবাসহ স্থানীয় অনেককে জানানোর পরও আমার ভাইয়ের মোবাইলটি কেউ উদ্ধার করে দিতে পারেনি। পরে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করার পর সাড়ে সাত হাজার টাকার বিনিময়ে মোবাইলটি ফিরিয়ে দিয়ে হুমকি দেন রিফাত ফরাজী। পরে রিফাত ফরাজীর হুমকিতে ওই এলাকা ছেড়ে একপ্রকার পালিয়ে আসে আমার ভাই।’

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর হোসেন মাহমুদ বলেন, ‘রিফাত শরীফ নিহত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ অনেক অভিযোগ পেয়েছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/জেডএ/পিআর

আরও পড়ুন