দুই প্রকৌশলীকে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতারা
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের দুই উপসহকারী প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তিন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওই কার্যালয়ে প্রকৌশলীদের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আমীনুর রহমান ও আব্দুল মালেককে মারধর করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেল মাদবর, তার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও পূর্ব মাদারীপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল হক ইমরান।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ডামুড্যা থানায় মামলা করা হয়েছে। উপসহকারী প্রকৌশলী আমীনুর রহমান বাদী হয়ে ওই তিন নেতাকে আসামি করে মামলাটি করেন। মামলার পর একজন আসামিকে আটক করেছে পুলিশ।
ডামুড্যা থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই তিন নেতা ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এনামুল হক ইমরান সম্প্রতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্প থেকে ১০টি শেলাই মেশিন সরবরাহ করার কাজ নেন। ৯২ হাজার টাকার ওই প্রকল্পটির বিল উত্তোলন নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।
এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে মেহেদী হাসান রুবেল মাদবর, জুলহাস মাদবর ও এনামুল হক ইমরান প্রকৌশলীদের কক্ষে যান। সেখানে তারা বিলের চেকে সই করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। মেশিন সরবরাহ ও বিতরণের পূর্নাঙ্গ কাগজপত্র না থাকায় প্রকৌশলীরা বিলের চেকে স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন ওই তিন নেতা উপসহকারী প্রকৌশলী আমীনুর রহমান ও আব্দুল মালেককে মারধর করেন। তারা উপজেলা প্রকৌশলী এসএম হাসান ইবনে মিজানকেও মারধরের চেষ্টা করেন। তখন তিনি কক্ষের দরজা বন্ধ করে আত্মরক্ষা করেন।
উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বলেন, এডিপি প্রকল্পের একটি বিলের চেকে সই করা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বিলের কাগজপত্রে ত্রুটি ছিল। আমরা ওই ত্রুটি সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তারা কাগজপত্র ছাড়াই বিল দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আমরা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা মারধর করেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের পরামর্শে মামলা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী হাসান ইবনে মিজান বলেন, রুবেল মাদবর ও জুলহাস মাদবর এলজিইডির কয়েকটি প্রকল্পের ঠিকাদার। কাজের মান নিয়ে কড়াকড়ি করার কারণে তারা আমাদের ওপর ক্ষুব্দ ছিল। তারা প্রায়ই হুমকি দিত, গালাগালি করত। এবার গায়ে হাত তুলেছে। দায়িত্ব পালন করার জন্য এভাবে আমাদের মার খেতে হবে?
জানতে চাইলে ডামুড্যা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেল মাদবর বলেন, আমাদের ছোট ভাই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান ছোট একটি কাজ করেছে। ওই কাজের বিলটি দিচ্ছিল না। ১০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিল। বিষয়টি জানতে গিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছে। আমরা কাউকে মারধর করিনি।
ডামুড্যা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা দুই উপসহকারী প্রকৌশলীকে মারধর করেছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে। আসামি জুলহাস মাদবরকে আটক করা হয়েছে।
ছগির হোসেন/এফএ/এমকেএইচ