প্রাথমিকের প্রশ্ন বিক্রি, ইবি কর্মকর্তা আটকের পর তদবিরে মুক্তি
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র বিক্রির অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক কর্মকর্তাসহ ছয়জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার আরাপপুরের সিটি কলেজ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। বাকিদের সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত করা হলেও ইবির কর্মকর্তা জামির হোসাইনের তদবিরে মুক্তি মিলেছে বলে জানা গেছে।
আটক হওয়া ওই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে কর্মরত রয়েছেন। তবে আটক হওয়া জামির হোসাইনকে ছেড়ে দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক নেতার তদবিরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঝিনাইদহে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বেচা-কেনার তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের সিটি কলেজ এলাকার আব্দুল মজিদের বাসা থেকে জামির হোসাইনসহ ৭ জনকে আটক করে ঝিনাইদহ গোয়েন্দা পুলিশ।
আটক অন্যরা হলেন- সদর উপজেলার গোপালপুর এলাকার অরুণ কুমারের ছেলে প্রশান্ত কুমার, বাড়ির মালিক আব্দুল মজিদ, শৈলকুপার রাণীনগর গ্রামের রোজদার মিয়ার ছেলে আল মাউন, একই উপজেলার সিদ্ধি গ্রামের এলাহি বক্সের ছেলে তাইনুল আলম, উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে হাসান ইকবাল ও রাণীনগর গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে রিপন হোসেন।
জানা যায়, চক্রটি ভুয়া প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রি করতে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ ব্যবহার করে আসছিল। গ্রুপ থেকে আসা এসব প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রি করে তারা প্রার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি বিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। অভিযানকালে ভুয়া প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রির ৬০ হাজার নগদ টাকাও জব্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি জাহাঙ্গাীর হোসেন জানান, ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের একটি বাসায় সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কেনা বেচা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। তারা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে আসা এ প্রশ্ন ও উত্তরপত্র জনপ্রতি ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করছিল। তবে পরীক্ষা শেষে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর খায়রুল ইসলাম আসল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে বিক্রি হওয়া প্রশ্নপত্র মেলানোর পর কোনো মিল খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় প্রতারণার মামলা হয়েছে।
তবে ইবির কর্মকর্তা জামির হোসাইনকে আটক করে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। এমনকি জামিরুল আটক হয়েছে কিনা সেটাও তিনি জানেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই।
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এফএ/জেআইএম