অসুস্থ নারীর পেটে লাথি মারল পুলিশ!
যশোরে পুলিশের বিরুদ্ধে সুফিয়া খাতুন (৫০) নামে অসুস্থ এক নারীর পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শহরের খড়কি হাজামপাড়া এলাকায় শ্রাবণী নামে এক নারীকে ধরতে গিয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই বিপ্লব ও ইকবাল এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
আহত সুফিয়া খাতুন ওই এলাকার আবদুল হামিদের বাড়ির ভাড়াটিয়া ইনসার আলীর স্ত্রী। শুক্রবার তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোতয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান। তিনি দাবি করেছেন, লাথি মারার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
আহত সুফিয়া খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সাদা পোশাকে দুই পুলিশ আমাদের বাসায় গিয়ে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া আসাদের স্ত্রী শ্রাবণীকে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে সে কোথায়। আমি বলি জানি না। এরপর ওই নারীর স্বামীর নাম জিজ্ঞেস করে। আমি বলতে পারি নাই। এর মধ্যে আমার ছেলেকে সিগারেট কিনতে পাঠায় পুলিশ। আমার ছেলে ফিরে এসে দেখে পুলিশ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। এ সময় ছেলে প্রতিবাদ করলে, তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেয়া হয়। আমি এগিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ করি। আমার ছেলেকে কেন ধরে নিয়ে যাচ্ছো। এ সময় একজন পুলিশ আমার তলপেটে জোরে লাথি মারেন। তখন আশপাশের আরও ভাড়াটিয়া জড়ো হয়ে যায়। এরপর পুলিশ চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমার পেটে টিউমার আছে। অপারেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার শরীরে রক্ত দেয়া হয়েছে। শুক্রবার আবার হাসপাতালে আসার কথা ছিল। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ পেটে লাথি মেরেছে। পেটে খুব ব্যথা। আমি কোনো অপরাধ করিনি। কিন্তু পুলিশ আমাকে এভাবে মারলো। আমরা কোনো ঝামেলার মধ্যে নেই। আমার ছেলে রিকশা চালায়। স্বামী দিনমজুর। আমি বাসায় থাকি।
সুফিয়ার স্বামী ইনসার আলী বলেন, ওই সময় আমি ছিলাম না। পরে শুনছি সাদা পোশাকে দুই পুলিশ এসেছিল। তারা আমার স্ত্রীকে মারপিট করেছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হুদা তুহিন জানান, শুক্রবার সকালে ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারী জানিয়েছেন তার পেটে লাথি মেরেছে পুলিশ।
এদিকে সুফিয়া খাতুন সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। শুক্রবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আনছার উদ্দিন, কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি অপূর্ব হাসান সুফিয়াকে দেখতে যান।
জানতে চাইলে ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, ওই নারীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ভিডিও রেকর্ডও আছে। লাথি মারার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এক নারী প্রতারণার মাধ্যকে এক যুবকের কাছ ল্যাপটপ বাগিয়ে নিয়েছে। পুলিশ তার খোঁজে গিয়েছিল। সেই নারী নাটক সাজিয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে।
মিলন রহমান/আরএআর/পিআর