বদলে গেল রোগীর রক্ত
মুক্তা বেগমের সিজারিয়ান অপারেশনের আগমুহূর্তে রক্তের প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল সংলগ্ন বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মুক্তাকে নিয়ে যান ভাই মো. ইয়াসিন হাওলাদার।
সেখানে মুক্তার রক্ত পরীক্ষার পর বি-নেগেটিভ ফলাফল আসে। সে অনুযায়ী রক্তদাতাকে খুঁজে বের করা হয়। কিন্তু রক্তের গ্রুপ মেলানোর সময় মুক্তার রক্তের গ্রুপ ও-নেগেটিভ আসে।
এ অবস্থায় আরেকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্ত পরীক্ষা করলে মুক্তার রক্তের গ্রুপ ও-নেগেটিভ আসে। পুনরায় বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মুক্তার রক্ত পরীক্ষা করলে ও-নেগেটিভ আসে।
গত ২৩ এপ্রিল একই দিন একই রোগীর দুই ধরনের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। বিষয়টি নিয়ে ১৩ জুন বৃহস্পতিবার ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন মুক্তার ভাই মো. ইয়াসিন হাওলাদার। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে নোটিশ দিয়ে রোববার (১৬ জুন) শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকপক্ষ তাদের দায় স্বীকার করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্তের কাছ থেকে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ অর্থ অভিযোগকারীকে দেয়া হয়।
বিকেলে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক অভিযোগকারী মো. ইয়াসিন হাওলাদারের হাতে জরিমানার প্রাপ্য অংশ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। এ সময় ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা বলেন, ভুল রিপোর্ট প্রদান ও প্রতারণার অভিযোগে ভোক্তা অধিকার আইনের ৫৩ ধারায় বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্তের কাছ থেকে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ অভিযোগকারীর প্রাপ্য। সে অনুযায়ী জরিমানার প্রাপ্য অংশ ১০ হাজার টাকা অভিযোগকারীকে দেয়া হয়েছে।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, বানি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতি আমাদের নজরদারি থাকবে। সিভিল সার্জনকে বিষয়টি তদারকির জন্য বলা হবে।
আতিকুর রহমান/এএম/পিআর