নড়িয়ায় পানির চাপে ভেঙে গেছে সংযোগ সড়ক, যান চলাচল বন্ধ
নড়িয়ার পোড়াগাছা এলাকায় একটি বিকল্প সংযোগ সড়ক পানির চাপে ভেঙে যাওয়ায় নড়িয়া-ঢাকা সড়কে (জাজিরা-নড়িয়া) দুই দিন যাবৎ সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নড়িয়াসহ চার উপজেলার মানুষ।
জানা গেছে ওই সড়কের পোড়াগাছা এলাকায় একটি নতুন কালভার্ট নির্মাণের জন্য সম্প্রতি আগের কালভার্ট ভেঙে পাশে একটি বিকল্প সংযোগ সড়ক বানানো হয়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ওই সংযোগ সড়কের দু’পাশে পানি জমে যায়। সেই পানির চাপে বৃহস্পতিবার রাতে সংযোগ সড়কের একটি অংশ ভেঙে যায়। তখন থেকেই ওই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কটি বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
শরীয়তপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নড়িয়া উপজেলা সদর হতে ঢাকা যাওয়ার জন্য ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক রয়েছে। সড়কটি জাজিরার টি অ্যান্ড টি মোড়ে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের সঙ্গে মিলেছে। সড়কের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের পোড়াগাছা এলাকায় একটি পুরাতন কালভার্ট ভেঙে নতুন কালভার্ট নির্মাণ কাজ চলছে। সাড়ে ৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ মিটার প্রস্থের এই কালভার্ট নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২৭ লাখ টাকা।
এলজিইডির নড়িয়া উপজেলা কার্যালয় থেকে গত এপ্রিলে আজিজুল হক নামে এক ঠিকাদারকে এ জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়। এরপর আগের কালভার্টটি ভেঙে যানবাহন চলাচলের জন্য একটি বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতদিন ওই বিকল্প সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করত।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বিকল্প সড়কের দু'প্রান্তে পানি জমে যায়। অতিরিক্ত পানির চাপে বিকল্প সড়কের একটি অংশ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে ভেঙে গেছে। ফলে ওই বিকল্প সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর স্থানীয়রা সেখানে কয়েকটি বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করেন। এখন সেই সাঁকো দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছে।
জানা গেছে ওই সড়ক দিয়ে নড়িয়া ছাড়াও ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলার লোকজন ঢাকায় যাতায়াত করেন। যান চলাচল বন্ধ থাকায় ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
নড়িয়া-ঢাকা সড়কের বাস চালক দেলোয়ার মিয়া বলেন, বিকল্প সড়কটি আরেকটু উঁচু করে বানালে এমন পরিস্থিতি হতো না। কয়েকদিন যাবৎ বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু এলজিইডি আগাম কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক নিয়ে তারা কেন এমন অবহেলা করেছে?
শামীম খান, পিন্টু ঘোষসহ কয়েক যাত্রী জানান, ঈদের সময় কালভার্টের কাজ না ধরলেও পারত। বর্ষাকালে কাজ ধরায় যে সংযোগ সড়ক করা হয়েছে তা পানির চাপে ভেঙে গেছে। সড়কটি কাঁদা হয়ে গেছে, গাড়িতে করে যাওয়া যায় না, হেঁটে যেতে খুব কষ্ট হয়।
নড়িয়া- জাজিরা এলাকার অটোরিকশা চালক রবিন মাহমুদ বলেন, বর্ষামৌসুম সামনে রেখে কালভার্টটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। অথচ সংযোগ সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে তা মাথায় রাখা হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই পিচ্ছিল ও কাঁদা হয়ে যায়, গাড়ি চালানো যায় না।
এলজিইডির শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আনন্দ কুমার ঘোষ বলেন, সংযোগ সড়ক ভেঙে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে এমন খবর পেয়ে আমাদের কর্মীদের সেখানে পাঠিয়েছি। ওই স্থানে এখন পানির চাপ বেশি। চাপ কমলে স্থানটি সংস্কার করা হবে। এ কাজের জন্য দু-এক দিন যাত্রীদের কষ্ট করতে হবে।
মো. ছগির হোসেন/এমএমজেড/এমকেএইচ