৫৭ বছরে প্রথমবারের মতো মেহেরপুরে রেণু উৎপাদন
দীর্ঘ ৫৭ বছরের রেকর্ড ভাঙল মেহেরপুর মৎসবীজ খামার। প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম রেণু পোনা উৎপাদন শুরু হয়েছে এ খামারে। পুকুরে পানি না থাকা ও অত্যধিক আয়রনের কারণে এতদিন রেণু উৎপাদন সম্ভব হয়নি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রেণু উৎপাদন সুফল বয়ে আনবে এ জেলার মৎস চাষিদের জন্য। অত্যাধুনিক আয়রন রিমোভাল প্লান্ট ও দক্ষ জনবল পেলে এখান থেকেই জেলার সিংহভাগ রেণু পোনার চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন খামার ব্যবস্থাপক।
মেহেরপুর মৎসবীজ খামার প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে। জেলার মাছচাষিদের রেণু পোনার চাহিদা মেটাতে সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এ খামারটি। এরপর কেটে গেছে ৫৭ বছর, কিন্তু দীর্ঘ এই সময়েও সম্ভব হয়নি রেণু পোনা উৎপাদন। পুকুরে পানি না থাকা ও পানিতে অত্যধিক আয়রনের উপস্থিতির কারণে রেণু উৎপাদনে যেতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বছরের পর বছর পুকুরগুলো ভরাট হতে থাকে। সম্প্রতি ব্র্যাডব্যাংক প্রকল্পের আওতায় পুকুরগুলো সংস্কার করে পলিথিন ব্যবহারের মাধ্যমে পানি ধারণক্ষমতা বাড়ানো হয়।
মেহেরপুর মৎসবীজ উৎপাদন খামার ব্যবস্থাপক ড. আসাদুজ্জামান মানিক বলেন, একটি ছোট আকারে আয়রন রিমোভাল প্লান্ট বসিয়ে চলতি বছরে ৫৬ কেজি রুই, মৃগেল, কাতলা মাছের রেনু উৎপাদন করা হয়েছে। পদ্মা নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে পুরুষ ও মা মাছ। পূর্ণাঙ্গভাবে রেণু উৎপাদনে যেতে হলে প্রয়োজন দক্ষ জনবল ও একটি অত্যাধুনিক আয়রন রিমোভাল প্লান্ট।
মেহেরপুরের মৎসচাষি বিপুল হালদার, আতাউল ইসলাম ও সৌরভ হোসেন জানান, জেলায় পর্যাপ্ত হ্যাচারি না থাকায় এখানকার মৎসচাষিদের রেণু সংগ্রহের জন্য যেতে হয় ঝিনাইদহ, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। অনেক সময় রাস্তায় মারা যায় রেনু। এ খামারে রেণু উৎপাদন শুরু হওয়ায় খুশি মৎসচাষিরা।
তবে আরেক মৎসচাষি আবুল হোসেন বলেন, জেলায় সবচাইতে বেশি চাষ হয় মনোসেক্স ও পাঙ্গাসের। সরকারিভাবে এসব রেণু উৎপাদনের দাবি জানান তিনি।
মেহেরপুর জেলা মৎস কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া জনান, রেণুর উৎপাদন বাড়াতে দক্ষ জনবল ও একটি আধুনিক আয়রন রিমোভাল প্লান্টের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনানো হয়েছে।
আসিফ ইকবাল/এফএ/পিআর