পানির নিচে পানি উন্নয়ন বোর্ড, লাইভে ব্যারিস্টার সুমন
হবিগঞ্জে দিন দিন জলাবদ্ধতা মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এক সময় যে শহরে জলাবদ্ধতা শুধু কল্পনাতেই ছিল, সেখানে এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের অধিকাংশ স্থানের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। এর মাঝে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় সার্কিট হাউজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এর আশপাশের এলাকায় তো রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যারা পানি ব্যবস্থাপনায় কাজ করেন তারা নিজেরাই বর্ষা মৌসুমে পানির নিচে অবস্থান করেন।
বছরের পর বছর এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলেও এ নিয়ে কেউই তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। যে শহরে কখনও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি, সে শহরের উন্নয়ন হওয়ার কথা। কিন্তু হয়েছে অবনতি। শহরের জলাবদ্ধতার নমুনা দেখলে মনে হয়, যেন বন্যা হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার নিজ জেলা হবিগঞ্জে এসে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার চিত্র তুলে ধরে ফেসবুকে লাইভ করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। প্রায় তিন ঘণ্টায় এ ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ৭ হাজার বার। মন্তব্য করেছেন ৩ হাজার ৯ জন। আর ভিডিওটি দেখেছেন ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ।
লাইভে ব্যারিস্টার সুমন জনপ্রতিনিধিদের দোষারোপ করে জলাবদ্ধা সৃষ্টি হওয়ার কারণ জানতে চান। তিনি বলেন, যাদের পানি ব্যবস্থাপনায় কাজ করার কথা তারাই পানির নিচে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা সার্কিট হাউজ পানির নিচে। শহরের প্রধান সড়কে হাঁটু পানি। শায়েস্তানগর হকার্স মার্কেট পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ঈদের মৌসুমেও তাদের ব্যবসা বাণিজ্য ভেস্তে গেছে।
এ সময় তিনি হকার্স মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, অল্প বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, একটু বৃষ্টি মানেই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়া। আগামীকাল ঈদ, আজ দোকানের চারপাশ পানিতে ডুবে গেছে, ব্যবসা করব কীভাবে। পানিতে ক্রেতা আসবে কীভাবে?
কী কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে সে চিত্র তুলে ধরেন গণমাধ্যম কর্মী রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন। তিনি বলেন, হবিগঞ্জ শহরে প্রচুর খাল, নালা, ডোবা ছিল। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। এখন এগুলো দখল হয়ে গেছে। হবিগঞ্জের পানি নিষ্কাশনের সবচেয়ে বৃহৎ জলাশয় পুরোনো খোয়াই নদীটি দখল করে অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ দখলকারীদের কারও বৈধতা নেই। এর কুফল মূলত আজকের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ।
ফেসবুক লাইভ নিয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, প্রযুক্তির এমন সদ্ব্যবহারের কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। শিক্ষাজীবন থেকেই আমি বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। কাজ করতে করতেই দেশে আধুনিক প্রযুক্তির প্রচলন ঘটে। মনে হচ্ছিল ছোট একটা ভালো কাজ করে যদি প্রচার করা যায়, তাহলে আরও হাজারটা ভালো কাজ হবে। একপর্যায়ে ধীরে ধীরে ফেসবুক লাইভে কথা বলার সাহস পাই। ভালো সাড়াও আসে সব জায়গা থেকে।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/আরএআর/এমএস