ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঈদ উপলক্ষে সিলেটে মৌসুমী ভিক্ষুক

নিজস্ব প্রতিবেদক | সিলেট | প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ০৪ জুন ২০১৯

সিলেট নগরের জিন্দাবাজারে ভিক্ষা করেন সাফিয়া বানু, নুর বেগম ও আলিম মিয়া। বন্দর বাজারে ভিক্ষা করেন রহিম আলী ও রংমালা বেগম। তারা ৫ জনই পঞ্চাশোর্ধ্ব। তাদের ৫ জনের দল একটাই। ঈদ উপলক্ষে তারা প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে এসেছেন নেত্রকোনার দুইটি গ্রাম থেকে। ৮-১০ দিন থাকবেন সিলেটে। এই কয়দিনের আয় নিয়ে ঈদের আগের দিন রাতে তারা আবার বাড়ি ফিরবেন।

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে সিলেট নগরে এরকম অনেক মৌসুমী ভিক্ষুক এসেছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। স্থানীয় ভিক্ষুকদের পাশাপাশি এই মৌসুমী ভিক্ষুকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নগরবাসী।

সিলেট নগরীর প্রতিটি বিপণী বিতান মার্কেটগুলো বা শহরের প্রতিটি বাজারে ও মোড়ে মোড়ে এবং রাস্তাঘাটে শুধু ভিক্ষুক আর ভিক্ষুক। কেউ দলবদ্ধভাবে আবার কেউ কেউ পৃথক হয়ে ভিক্ষা করছে। সিলেট নগরে এমনিতেই স্থায়ী অনেক ভিক্ষুক রয়েছেন। তাদের দৌরাত্ম্যেই যখন অতিষ্ঠ নগরবাসী তখন ঈদ ঘিরে আসা মৌসুমী এসব ভিক্ষুকরা যেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কাছে এক মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

Sylhet-Bikkuk

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট থেকে ক্রেতারা বাইরে এলে বা কোনো গাড়ি এলে দ্রুত গিয়ে হাত পাতছেন ভিক্ষকরা। পুরুষের চাইতে নারী ভিক্ষুকদের বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে সকলেই পঞ্চাশোর্ধ্ব।

সিলেট জেলার কোনো উপজেলাই যেন এখন ভিক্ষুকমুক্ত নয়। ভিক্ষাবৃত্তি সমাজের নিকৃষ্টতম পেশা হলেও বর্তমানে যেন লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে।

নেত্রকোনা থেকে আসা ৫ জনের একদল ভিক্ষুক জানান, তারা গত দুই বছর থেকে প্রতি ঈদে দলবদ্ধভাবে সিলেটে আসেন। ৮-১০ দিন তারা নগরীতে ভিক্ষা করেন। নগরের বিভিন্ন মার্কেটের সামনেই রাতযাপন করেন। ঈদের আগের দিন তারা আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এই ৮-১০ দিনে তাদের আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা।

Sylhet-Bikkuk

এদিকে ২০১৭ সালে সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক নুরেমি জামান নিজ উদ্যোগে সিলেটকে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়নের আগেই তিনি বদলি হন। এছাড়া দেশে ভিক্ষুকমুক্তকরণে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

চলতি বছরের শুরুতেই সিলেটে ভিক্ষুক শুমারির উদ্যোগ নেয় ‘পরিবর্তন চাই’ নামে একটি সংস্থা। ‘ভিক্ষা নয় কর্ম চাই, দয়া নয় সম্মান চাই’ এই স্লোগান সামনে রেখে পঙ্গু ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন, দুস্থ ও অসহায় ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান এবং ব্যবসায়ী ভিক্ষুকমুক্ত করতেই এই উদ্যোগ নেয় তারা। নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ করে ভিক্ষুকদের শুমারি তথ্য উপাত্ত ডাটাবেজ করার উদ্যোগ নেয়।

তবে এই ভিক্ষুক শুমারি এখনও শেষ হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনে সরকারি উদ্যোগে কাজ করা হচ্ছে। একটা সময় ভিক্ষুকমুক্ত সিলেট গড়া সম্ভব হবে।

ছামির মাহমুদ/এফএ/পিআর

আরও পড়ুন