ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঈদে বিচ্ছিন্ন থাকছে কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ!

সায়ীদ আলমগীর | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ০৪ জুন ২০১৯

নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কলাতলী সংযোগ সড়ক পুনঃনির্মাণ কাজ। ফলে ঈদের ছুটিতে পর্যটন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকছে কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ সড়কটি।

বিগত চার মাস ধরে বিকল্প হিসেবে সৈকতের বালিয়াড়ি ব্যবহার করা হলেও সাম্প্রতিক বৈরী আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রে পানি বাড়তে থাকায় এ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঈদের সময় বৃষ্টিপাত হলে পানি আরও বাড়বে। আর তা হলে এ সময়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ- এমনই অভিমত স্থানীয়দের।

তাদের অভিযোগ, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কাজের ধীরগতি, বার বার ডিজাইন পরিবর্তন ও নানা কারণে দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন এই সড়কে চলাচলরত সাধারণ মানুষ ও দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। তবে, দ্রুতই সড়কটির পুনঃনির্মাণ কাজ শেষে দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন।

পর্যটনের ক্ষেত্রে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক অতি গুরুত্বপুর্ণ। পর্যটকদের পাশাপাশি সড়কটি নিয়মিত ব্যবহার করছেন শহরের কলাতলী, দরিয়ানগর, রামুর হিমছড়ি, উখিয়ার সোনারপাড়া, ইনানী, মনখালী, টেকনাফের শামলাপুর, বাহারছড়াসহ লাখো উপকূলবাসী।

কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের তীর ধরে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি ২০১৭ সালের ৬ মে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু মেরিন ড্রাইভের শুরুর দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে বেলী হ্যাচারি মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৩শ’ মিটার সড়ক বিগত ২০০০ সালে সামুদ্রিক ভাঙনে বিলীন হয়ে গেলে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

Cox-Marine-drive

পরে ২০০৫-০৬ সালে কলাতলী গ্রামের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া সড়কটিকে সামান্য প্রশস্ত করে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে পৌর কর্তৃপক্ষ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।

এ জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৩ মাস কলাতলীর গ্রামীণ সড়কটি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। তখন থেকেই শহরের সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ মেরিন ড্রাইভের বেইলি হ্যাচারি পয়েন্ট থেকে সমুদ্র সৈকতে ওঠানামার একটি বিকল্প পথ তৈরি করে।

একইভাবে কলাতলী পয়েন্টেও মাটি দিয়ে একই ধরনের পথ তৈরি করে। ফলে সমুদ্র সৈকত ধরে সনাতনী উপায়ে যানবাহন চলাচল নির্ভর করছে এখন সমুদ্রের জোয়ার ভাটার উপর। প্রতিদিন দুইবার সামুদ্রিক জোয়ারের সময় ৪-৫ ঘণ্টা করে যান চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে শহরের একাংশের হাজার হাজার মানুষ ও শত শত যানবাহন সাময়িকভাবে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এছাড়া সমুদ্র সৈকতে চলাচল করতে গিয়ে সামুদ্রিক জোয়ারের ধাক্কায় প্রতিদিন দুর্ঘটনাও ঘটছে।

এদিকে রাস্তা খারাপের অজুহাতে ভাড়াবাড়িয়ে দিয়েছে যাত্রীবাহী অটোরিক্সা ও ইজিবাইকগুলো। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ী, দেশি-বিদেশী পর্যটক, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও সংশ্লিষ্ট ও শিক্ষার্থীরা।

অপরদিকে যাতায়ত ভোগান্তিতে ইনানী-হিমছড়ির হোটেলগুলোতে যাচ্ছে না কোনো পর্যটক। এর প্রভাব পড়ছে পর্যটন শিল্পেও। বিকল্প সড়ক হিসেবে এক কিলোমিটার সৈকতের ওপর দিয়ে যান চলাচলের কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

Cox-Marine-drive-3

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, পৌরসভা তিন মাসের মধ্যে পুনঃনির্মাণ কাজ শেষ করার কথা বললেও এ পর্যন্ত এক-তৃতীয়াংশ কাজও শেষ করতে পারেনি। সামনে বর্ষাকাল, সাগরে পানি বাড়লে সকাল-বিকেল যে গাড়ি চলতো তাও বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষ করে ঈদের আগে সংস্কার শেষ করতে না পারায় চরম ক্ষতির মুখে পড়বে মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে গড়া ওঠা হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট মালিকরা।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের পৌর চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, মেরিন ড্রাইভ সংযোগ সড়ক সংস্কার কাজ প্রায় অর্ধেক শেষ হয়েছে। আশা করি বাকি কাজ দ্রুতই শেষ হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে কোনো সড়কের কাজ যেন দুর্বল না হয়। তাই আমরা উক্ত সড়কটি এমনভাবে করতে চাই যাতে আগামী কয়েক বছরেও যেন কিছু না হয়। সেভাবে কাজ করতে গিয়ে একটু সময় লাগছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, কলাতলী মেরিন ড্রাইভ সংযোগ সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কক্সবাজার পৌরসভা এই কাজটি করছে। তারা কথা দিয়েছে কাজ দ্রুত শেষ করবে।

সায়ীদ আলমগীর/এমএমজেড/পিআর

আরও পড়ুন