নুসরাতের পরিবারকে পুলিশের ঈদ উপহার
ফেনীর সোনাগাজীতে নিহত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদ উপহার দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। শনিবার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানের পক্ষ থেকে নুসরাতের দাদা মাওলানা মোশাররফ হোসেনের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেন সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ।
পুলিশ সুপারের বরাত দিয়ে মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুলিশ প্রশাসন সব সময় নুসরাতের পরিবারের পাশে রয়েছে। নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তাসহ পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা থাকবে। অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর থেকে পুলিশ নুসরাতের বাড়িতে নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। তারা চাইলে যে কোনো ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।
এ সময় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান, ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হানসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের অভিযোগে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন। মামলার এজহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
গত ২৯ মে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীমকে (২০) অভিযুক্ত করে তাদের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)।
এ মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রাশেদুল হাসান/আরএআর/এমএস