মে মাসেও টেকনাফ স্থলবন্দরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি
কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে মে মাসেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। মাসের শেষ দিন শুক্রবার টেকনাফ স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি কম হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দীন জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মে মাসে ১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু মে মাসের শেষ কর্ম দিবস পর্যন্ত ১৯৭টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ১১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। সে হিসেবে মে মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। এ মাসে মিয়ানমার থেকে ৩৩ কোটি ৯৮ লাখ ২ হাজার টাকার পণ্য আমদানি করা হয়।
তিনি আরও জানান, পুরো মাসে ৫৫টি বিল অব এক্সপোর্টের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯২ হাজার টাকার পণ্য মিয়ানমারে রফতানি করা হয়। স্থলবন্দর ছাড়াও, শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে ৫ হাজার ৫৪২টি গরু, ২ হাজার ৯৮১টি মহিষ আমদানি করে ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দীন জানান, বন্দরের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে প্রতি মাসে মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ কাঠ আমদানি হত। এ থেকে রাজস্ব আয় বাড়ত। কাঠের পাশাপাশি অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্য ও হিমায়িত মাছও আসত আমদানি হয়ে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে কাঠ, হিমায়িত মাছসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি আগের মত হচ্ছে না। তাই বিগত মাসের মতো মে মাসেও সীমান্ত বাণিজ্যের মন্দাভাব কাটেনি।
তিনি বলেন, খবর নিয়ে দেখেছি মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সমস্যা চলছে। তাই মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি স্থবির হয়ে আছে। এসব কারণে মাসিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসায় সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে না। ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বর্তমানে মাদক ও রোহিঙ্গার কারণে অনেক ব্যবসায়ী টেকনাফ বন্দর ছেড়ে অন্যত্র ব্যবসা স্থানান্তর করছেন। এসবের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের আওতায় আমদানি-রফতানি পণ্যের টাকা আদান-প্রদানের সুষ্ঠু পরিবেশও সৃষ্টি হয়নি। ফলে দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে স্থলবন্দরের কার্যক্রম। তাই সীমান্ত বাণিজ্যকে গতিশীল করতে জরুরি উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে তারা জানান।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/জেআইএম