লালপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে পেটালেন ছাত্রলীগকর্মী
নাটোরের লালপুরে সরকারি ভাবে বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও ইউপি চেয়ারম্যান দ্বন্দ্বের জের ধরে চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে আহত করেছে এমপি সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার গোপালপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত কদমচিলান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এমপি শহিদুল ইসলাম বকুল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের আমি চিনিও না। রাজনৈতিক কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
অপরদিকে, এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজার ভাই আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় নাজিম আলী সরদার নামে এজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার নাজিম আলী সরদার পানঘাটা গ্রামের খোরশেদ সরদারের ছেলে।
আহত ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভিজিএফ কার্ডের তালিকা জমা দিতে উপজেলা পিআইও অফিসে যান কদমচিলান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। পিআইও আব্দুর রাজ্জাক দলীয় ভাগের কার্ডগুলো স্থানীয় এমপি সমর্থিত ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করে তালিকা জমা দেয়ার জন্য বলেন অন্যথায়, তালিকা নেয়া যাবে না বলে জানান।
এসময় চেয়ারম্যান জানান, স্থানীয় ইউপি ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের মাঝ থেকে দলীয় কার্ডের তালিকা নেয়া হয়েছে। তখন পিআইও বলেন, দলীয় বুঝি না। এমপি কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিদের মাধ্যমে দলীয় কার্ডের তালিকা দিতে হবে। এভাবে কথাকাটির এক পর্যায়ে দু'জনে উত্তেজিত হয়ে হাতাহাতির পর্যায়ে গেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিতরা দু'জনকে নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন, দেলোয়ার, সজলসহ কয়েকজন। তারা চেয়ারম্যানকে খোঁজ করতে থাকে ও এমপির নির্দেশ অমান্য করায় হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ৬টার দিকে চেয়ারম্যান সেলিম রেজা উপজেলা থেকে বের হয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার পিছু নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে গোপালপুর বাজারে পথরোধ করে চেয়ারম্যানের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, পিআইও এবং চেয়ারম্যানের মধ্যকার বিবাদের বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তাদের বিবাদ মিটিয়ে নিয়মমাফিক কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি। পরবর্তীতে শুনলাম চেয়ারম্যানকে পথিমধ্যে মারধর করা হয়েছে। কে বা কারা মেরেছে আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
লালপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, এ বিষয়ে মামলা হওয়ার পর পুলিশ নাজিম নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।
রেজাউল করিম রেজা/এমএএস/এনডিএস/