সন্তানের অপেক্ষায় অশ্রুজলে সাতটি বছর কাটল এক মায়ের
সন্তানের সঙ্গে ঈদ করার জন্য দীর্ঘ সাত বছর ধরে অপেক্ষা করছেন পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাকুনিয়ারি গ্রামের এক মা। এবছরও তিনি অপেক্ষায় আছেন- সন্তান তার সঙ্গে ঈদ করবে এই আশায়। কিন্তু মায়ের এ আশা পূরণ হবে কি-না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
সন্তানকে ফিরে পেতে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ২০১২ সালে নিখোঁজ হওয়া কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আল মুকাদ্দাসের মা আয়শা সিদ্দিকা।
নিখোঁজ মুকাদ্দাস পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাখুনিয়ারি গ্রামের মাওলানা আব্দুল হালিম ও আয়শা সিদ্দিকা দম্পতির বড় ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ২০১২ সালের ৪ ফেরুয়ারি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকা বিভাগের এলএলবি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আল মুকাদ্দাস ও তার বন্ধু ওয়ালীউল্লাহকে ঢাকার সাভার উপজেলার নবীনগরে র্যাব-৪ এর চেকপোস্টের সামনে হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে র্যাব পরিচয়ে নামিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মুকাদ্দাস ও তার বন্ধু ওয়ালীউল্লাহর কোনো খোঁজ মিলছে না। র্যাবের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও ছেলেকে পাওয়ার কোনো আশ্বাস পাচ্ছেন না তিনি।
এসময় তিনি ঈদের আগেই ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আকুতি জানিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা থেকে কুষ্টিয়াগামী হানিফ পরিবহনের ৩৭৫০ নং বাসের সি-১ সিটে করে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় মুকাদ্দাস। পথিমধ্যে সাভারের নবীনগর র্যাব ক্যাম্পের সামনে বাসটি থামিয়ে সাদা পোশাকধারী ৮/১০ জন তাকে ও তার বন্ধুকে নামিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তারা র্যাব-৪ ও ডিবি পরিচয় দেয়। যা পরে ওই বাসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ মাসুমের কাছ থেকে জানা যায়। এ নিয়ে ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দারুসসালাম ও আশুলিয়া থানায় দুইটি জিডি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এরপর দীর্ঘ ৭ বছরে পুলিশ, র্যাব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তির কাছে ঘুরেও কোনো ফল পাইনি। মা হিসেবে আমার কেবলই মনে হয়- মুকাদ্দাস এখনও বেঁচে আছে। তাই দেশবাসী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলেকে ঈদুল ফিতরের আগে কোলে ফিরে পাবার দাবি জানান এই মা।
সংবাদ সম্মেলনে মুকাদ্দাসের চাচা মোহাম্মদ আব্দুল হাই ও ছোট ভাই মুকাররম হুসাইন উপস্থিত ছিলেন।
মাহামুদুর রহমান মাসুদ/এমবিআর/পিআর