শাশুড়িকে চুলার গর্তে পুঁতলেন গৃহবধূ
ঘুমন্ত শাশুড়িকে হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহ চুলার গর্তে পুঁতে রেখেছিলেন রাজশাহীর তানোরের এক গৃহবধূ। বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার প্রকাশনগর আদর্শ গুচ্ছগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শাশুড়ি মোমেনা বেগমের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করে তানোর থানা পুলিশ। ফাঁকা বাড়িতে দুপুরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের দুই পূত্রবধূ সখিনা বেগম (২২) ও রিনা বেগমকে (৩০) হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে সখিনা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘুমন্ত শাশুড়িকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। রিনার সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহত মোমেনা বেগম ওই গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী। অভিযুক্ত সখিনা তাদের ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী। পেশায় দিনমজুর মোস্তাফিজুর রহমান কৃষি শ্রমিকের কাজে খুলনায় অবস্থান করছেন। বাড়িতে কেবল বউ-শাশুড়ি ছিলেন। পাশেই আরেক বাড়িতে স্ত্রী রিনা বেগমকে নিয়ে আলাদা বাস বড় ছেলে মোমিনুল ইসলামের। ঘটনার সময় মোমিনুলও বাড়ির বাইরে ছিলেন।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাশুড়িকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন ওই গৃহবধূ। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া মাটিচাপা মরদেহ উদ্ধারের পর থানায় নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার মরদেহ নেয়া হবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে।
পুলিশ হেফাজতে থাকা দুই গৃহবধূর বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্তা বলেন, সকালে বাড়িতে ধান শুকাচ্ছিলেন সখিনা ও তার শাশুড়ি। ওই সময় মুরগিতে ধান খাওয়া নিয়ে পূত্রবধূর ওপর চড়াও হন শাশুড়ি মোমেনা বেগম।
একপর্যায়ে পূত্রবধূর গায়ে হাতও তোলেন তিনি। এরপর দুপুরে নিজ শোবার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন শাশুড়ি। ওই সময় পূত্রবধূ সখিনা বাঁশ দিয়ে তার মাথায় সজোরে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এরপর বাড়ির আঙিনায় চুলার গর্তে মরদেহ মাটিচাপা দেন।
পরে পাশের বাড়িতে গিয়ে জা রিনা বেগমকে এই ঘটনা জানান। এরপর পুরো এলাকায় জানাজানি হলে দুই পূত্রবধূকে আটকে রাখেন গ্রামবাসী। পরে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। এনিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান ওসি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান মুণ্ডুমালা পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল বাশার। তিনি বলেন, নিহতের দুই পুত্রবধু সখিনা ও রিনাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে আইনত ব্যবস্থা নেবে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/বিএ