দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের
আর মাত্র সাতদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সিলেটের দর্জিপাড়ায় (টেইলার্সের দোকানে) ততই বাড়ছে ব্যস্ততা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্ডারের পোশাক সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন দর্জিরা। দর্জি দোকানগুলোয় এখন রাতদিন সুঁই-সুতার কাজ কাজ চলছে। গেল সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দিগুণ চাপ পড়েছে কাজে। তাই নতুন করে আর অর্ডার নিচ্ছেন না নামিদামি দর্জি দোকানিরা।
দর্জিরা জানান, ঈদের জন্য রমজানের শুরু থেকেই অর্ডার আসতে থাকে। ১৫ রমজানের পর অনেক দোকানেই নতুন করে অর্ডার রাখা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে পুরোনো অর্ডারের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন দর্জিরা। বিশেষ করে নারীদের পোশাক তৈরির দোকানগুলোতে বাড়তি ব্যস্ততা রয়েছে।
সিলেট শুকরিয়া শপিংসিটিতে পোশাক বানাতে আসা তরুণী ফাহমিদা জামান বলেন, ঈদের সময় সবাই চায় নিজের নতুন পোশাক দিয়ে অন্যকে চমকে দিতে। রেডিমেড পোশাকের দোকানে একই নকশার অনেক পোশাক বানানো হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায়, সেখান থেকে কেনা পোশাকের নিজস্বতা থাকে না। এজন্য প্রতিবারই ঈদে নিজের পছন্দমতো কাপড় কিনে দর্জির কাছে বানাতে দেই। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
সিলেটের ‘দর্জিপাড়া’ হিসেবে খ্যাত কুদরত উল্লাহ মার্কেট, পঞ্চখানা, ইদ্রিছ মার্কেট, সমবায় ভবন, কাজি ম্যানশন, মধুবন মার্কেট, শুকরিয়া মার্কেট, সিলেট প্লাজা মার্কেটের বিভিন্ন দর্জি দোকানে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কারিগরদের এখন দম ফেলার সময় নেই। এই ব্যস্ততা চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।
মুক্তিযোদ্ধা গলির একটি দর্জি দোকানের মাস্টার আফজল হোসেন বলেন, ঈদ সামনে রেখে দিনরাত কাজ চলছে। দম ফেলার সময় নেই। চার-পাঁচ ঘণ্টা ঘুমিয়ে বাদ বাকি সময় চলছে কাজ। এবার ঈদ উপলক্ষে লং কামিজ, জিপসি, আনার কলি, বাইশ কলি ডিজাইন নামে জামা বানানোর চাহিদা বেশি।
সেলাইয়ের ধরন ও নকশার ভিন্নতার জন্য দর্জিবাড়িতে একেক পোশাকের মজুরিও হয়ে থাকে ভিন্ন। লং কামিজ বানাতে খরচ পড়ছে ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা, সালোয়ারসহ ডাবল কামিজ ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা, আনারকলি ৯০০ থেকে ১৭০০, ফ্রক কাটের সালোয়ার-কামিজে খরচ ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকা, সুতি কাপড়ের সালোয়ার-কামিজের খরচ ৪০০ থেকে ৯০০ এবং ব্লাউজ ডিজাইনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।
দর্জিরা জানান, ছেলেদের পাঞ্জাবি বানাতে খরচ পড়ছে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা। পায়জামার জন্য দিতে হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০, শার্টে ৩০০ থেকে ৮০০, প্যান্ট সাড়ে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা।
সিলেট নগরের কাকলি, সিটি সেন্টার, মিলিনিয়াম, শুকরিয়া, লতিফ সেন্টার, আল-হামরা, হাসান মার্কেট, মধুবন মার্কেট, সিলেট প্লাজা প্রভৃতি মার্কেটে দেখা গেছে, বিপণি বিতানগুলোতে রেডিমেড পোশাকের পাশাপাশি থানকাপড়ও বেশ বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা নিজেদের পছন্দের পোশাক তৈরির জন্য বৈচিত্র্যময় কাপড় ক্রয় করছেন।
ছামির মাহমুদ/আরএআর/পিআর