ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

হাসপাতালে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা, পলেস্তারা খসে আহত ৩

জেলা প্রতিনিধি | গোপালগঞ্জ | প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ২৯ মে ২০১৯

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে রোগী ও তার স্বজনরা আহত হচ্ছেন। হাসপাতালের জরাজীর্ণ ভবনে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে চলছে চিকিৎসা।

গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে হাসপতালের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে দুই শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছে। তারপর হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে রোগী বের করে বারান্দা ও ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডের দরজায় তালা মেরে দিয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলার তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ৫০ শয্যার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। সাধারণ মানুষ এখান থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। হাসপাতালের ২য় তলায় নারী ও পুরুষ রোগীদের জন্য পৃথক দুটি ওয়ার্ড রয়েছে। এ ওয়ার্ড দুটির ছাদ অনেক আগেই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। প্রায়ই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রোগী, তাদের স্বজন, নার্স ও কর্মচারীরা আহত হচ্ছেন।

গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতালে অসুস্থ্য মামাকে দেখেতে এসে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে কোটালীপাড়া উপজেলার মাঝবাড়ি গ্রামের উজ্জ্বল মোল্লার শিশু পুত্র তামিম মোল্লা (৭) আহত হয়েছে। এ সময় তামিমের খালা কুলসুম বেগম (১৯) ও খালাত বোন শারমিন খানম (৬) আহত হয়।

kotalipara-Hospital

তামিম কোটালীপাড়া উপজেলার লোহারঅংক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র। তামিম মোল্লাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। অপর দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। এ ঘটনার পর রোগীদের হাসপাতালের বারান্দা ও ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেখানে ফ্যান না থাকায় রোগীদের গরমে কষ্ট হচ্ছে।

বুধবার সকালে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি রোগীদের খোঁজ-খবর নেন।

আহত তামিমের মা তানজিলা বেগম বলেন, আমার ভাই হেলাল মাতুব্বর অ্যাপেনডিক্সে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমার ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে তাকে দেখতে হাসপাতালে আসি। এ সময় আমার বোন কুসুম ও তার মেয়ে শারমিন ছিল। হঠাৎ করে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে আমার ছেলে, বোন ও ভাগনি আহত হয়। আমার ছেলের মাথা ফেটে গেছে। মাথায় অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে।

রোগীর স্বজন কোটালীপাড়া উপজেলার মধ্যহিরণ গ্রামের পারভীন বেগম বলেন, হাসপাতালে আমরা আসি জীবন রক্ষা করতে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি ভবনের বেহাল দশা। এখানে চিকিৎসক, নার্স, রোগীসহ হাসপাতালের সবাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। যে কোনো সময় ছাদ ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

kotalipara-Hospital

রোগীর স্বজন করিমন বেগম বলেন, বারান্দায় ফ্যান নেই। গরমে আমাদের রোগীর প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে।

হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বর্ণালী রায় (৪৫) বলেন, মঙ্গলবার ওয়ার্ডে কাজ করার সময় ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। ওই বাচ্চাটির মাথা ফেটে রক্ত পড়ছিল। আমি মাথা চেপে ধরে বাচ্চাটিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেই। এর আগেও ফ্যান পড়ে নার্স আহত হয়েছে। এছাড়া ছাদের পলেস্তারা প্রায়ই খসে পড়ে অনেকে আহত হয়েছেন। আমরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। এখন রোগীদের বারান্দা ও ফ্লোরে রাখা হয়েছে। হাতে ফাইল নিয়ে রোগীকে নাম ধরে খুঁজে বের করতে হচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে এখন কাজ আরও বেশি করতে হচ্ছে।

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশান্ত বৈদ্য বলেন, ওই শিশুটিকে সব ধরনের সহায়তার পাশাপাশি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমরা ওষুধের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। দুই ওয়ার্ড থেকে রোগী বের করে বারন্দা ও ফ্লোরে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে রোগী স্থানান্তর করতে পারলে এ ঝুঁকি নিরসন হবে।

এস এম হুমায়ূন কবীর/আরএআর/পিআর

আরও পড়ুন