নুসরাত হত্যা মামলাকে তথাকথিত বললেন আসামি রুহুলের অনুসারীরা
বহুল আলোচিত সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যার মামলাকে তথাকথিত হত্যা মামলা বলে আখ্যায়িত করেছেন সোনাগাজী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা নুরনবী লিটন।
সোমবার নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনের মুক্তির জন্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের ব্যানারে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকনসহ বেশিরভাগ নেতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করেননি।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুল হক বিটুর সভাপতিত্বে ও জেলা পরিষদ সদস্য নাছির উদ্দিন আরিফ ভূঞার সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মতিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু, মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাদল, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য আবদুস সালাম খোকন প্রমুখ।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- চরচান্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মানিক, নবাবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রূপম শর্মা, বগাদানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলা উদ্দিন বাবুল, পৌর যু্বলীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন অপু ও যুবলীগকর্মী আবদুল হালিম সোহেল।
ইফতার মাহফিলে বক্তারা রুহুল আমিনকে নির্দোষ আখ্যা দিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা থেকে রুহুল আমিনকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি আহ্বান জানান। তারা দাবি করেন নুসরাত হত্যা মামলা তথাকথিত একটি মিথ্যা মামলা।
ইফতার মাহফিলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, আয়োজকরাও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তবে তারা রুহুল আমিনের অনুসারী। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। নুসরাত হত্যা মামলার দায়িত্ব স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, তদন্তে যদি রুহুল আমিন নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে কারও কিছু করার নেই। আবার দোষী প্রমাণিত হলেও কারও কিছু করার নেই। তদন্তাধীন বিষয়ে আমি বেশি মন্তব্য করতে রাজি নই।
রুহুল আমিনের কারামুক্তি ও দোয়া কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন সোনাগাজী বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের খতিব মাও. ওমর ফারুক।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনা তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
রাশেদুল হাসান/বিএ