ক্লিনিকের দরজা বন্ধ করে স্বামী-স্ত্রীকে পেটালেন ফার্মাসিস্ট
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট পদে কর্মরত মো. হেদায়েত উল্লাহ। বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকায় আনোয়ারা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকও তিনি।
হেদায়েত উল্লাহ নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই ক্লিনিকে রোগী দেখতেন ও অপারেশন করে আসছেন।
রোববার রাত ১১টার দিকে গৌরনদী উপজেলার বাঘার গ্রামের বিমল রায় তার প্রসূতি স্ত্রী অনিতা রায়ের প্রসব ব্যথা উঠলে আনোয়ারা ক্লিনিকে যান।
বিমল রায় ক্লিনিকের ভেতরে গিয়ে কর্তব্যরত ডাক্তারকে খুঁজলে হেদায়েত উল্লাহ নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে তার ক্লিনিকে রোগীকে ভর্তি করতে পরামর্শ দেন। তবে রোগীর স্বজনরা হেদায়েত উল্লাহকে আগ থেকে চেনার কারণে অনিতাকে নিয়ে ক্লিনিক থেকে বের হয়ে অন্য ক্লিনিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় হেদায়েত উল্লাহ ও তার ক্লিনিকের স্টাফরা রোগী ও তার স্বজনদের আটকে দরজা বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে হেদায়েত উল্লাহ ও তার ক্লিনিকের স্টাফদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রোগী ও তার স্বামীকে মারধর করেন হেদায়েত উল্লাহ ও তার স্টাফরা। পরে একটি কক্ষে রোগী ও তার স্বজনদের আটকে রাখা হয়।
বিমল রায় মুঠোফোনে এ ঘটনা গৌরনদী মডেল থানাকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রোগী ও স্বজনদের উদ্ধার এবং অভিযুক্ত হেদায়েত উল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সোমবার সকালে বিমল রায় বাদী হয়ে হেদায়েত উল্লাহকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় মামলা করেন। বিকেলে হেদায়েত উল্লাহকে বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতের বিচারক হেদায়েত উল্লাহকে কারাগারে পাঠান। হেদায়েত উল্লাহ গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ পালরদী এলাকার আলী আকবরের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের এসআই মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, ডা. হেদায়েত উল্লাহ বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট হিসেবে চাকরি করছেন। তার বাড়ি গৌরনদীতে। সেখানে একটি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। শুধু তাই নয়, ওই ক্লিনিকে আগত রোগীদের জটিল রোগেরও চিকিৎসা দিতেন এবং অপারেশন করতেন হেদায়েত উল্লাহ। তবে বিষয়টি এতদিন কেউ জানতো না। হেদায়েত উল্লাহকে গ্রেফতারের পর তার প্রতারণার বিষয়গুলো বেরিয়ে আসে।
এসআই মো. তৌহিদুজ্জামান আরও বলেন, বিমল রায় ও তার প্রসূতি স্ত্রী অনিতাকে মারধর ও চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ঘটনায় হেদায়েত উল্লাহর নামে থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের বিচারক হেদায়েত উল্লাহকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এসআই তৌহিদুজ্জামান।
সাইফ আমীন/এএম/এমএস