রাজশাহী নগরী থেকে সরছে কারা একাডেমি
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন পদ্মা তীরঘেঁষে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির। পদ্মা নদী দখলের অভিযোগ এনে এতে আপত্তি জানিয়েছে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।
এতেই সরে যাচ্ছে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি। রাজশাহীর অন্য বিকল্প কোনো স্থানে এই স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার আভাস দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
রোববার রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এই সংসদ সদস্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বলেছেন, ‘বিকল্প স্থান খুঁজে দেয়া আমাদের জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব’।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে পদ্মা নদীর চরে এখন কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
তবে এ খবরেই আন্দোলনে নেমেছে রাজশাহীর কয়েকটি সামাজিক সংগঠন। তারা পদ্মার চরে কারা একাডেমি নির্মাণের বিরোধিতা করে বলছে, নদীকে নিজস্ব গতিতেই চলতে দিতে হবে।
ফেসবুক পেজে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাজশাহীতে যারা বেড়ে উঠেছেন তাদের পদ্মা নদীর সঙ্গে একটা আত্মার সম্পর্ক আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীন কোনো প্রতিষ্ঠান জনগণের চাওয়ার বিপরীতে সিদ্ধান্ত নেবে না। একই সঙ্গে এখানকার প্রতিটি রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোও আমাদের অনেক গর্বের। প্রয়োজনে তাদের দেখভাল করাও সবার কর্তব্য।
তিনি আরও লিখেছেন, নতুন কিছু করতে চাইলে তার জন্য সঠিক জায়গা খুঁজে দেয়া আমাদের জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব। কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি রাজশাহীতেই হবে, নতুন কোনো স্থানে। মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ তাকে আমি দিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ হবে।
জানা গেছে, এর আগে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা বিশাল চরে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, শহর রক্ষাবাঁধ পেরিয়ে নদী অভ্যন্তরে জেগে ওঠা চরে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এরপর পরই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। এরপরও কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দখল প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
রাজশাহী শহর রক্ষাবাঁধঘেঁষা নদীর চর দখল করে কারারক্ষীদের প্রশিক্ষণও শুরু করে দেয়া হয়। সম্প্রতি নির্মাণকাজের শুরুতেই তাদের সীমানায় থাকা বহু শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলে কারা কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেয়া হয়। তীব্র প্রতিবাদের মুখে শেষে পর্যন্ত অবশিষ্ট গাছ কাটা বন্ধ হয়ে যায়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/পিআর