ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দিনে দিনে দাম বাড়ছে ধানের

জেলা প্রতিনিধি | শরীয়তপুর | প্রকাশিত: ০৯:২৬ এএম, ২৬ মে ২০১৯

শরীয়তপুরের বাজারে বোরো ধানের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ধান যেখানে বিক্রি হয়েছিল ১৩ টাকা করে সেখানে বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৬ থেকে সাড়ে ১৬ টাকা দামে। তবে এ বছর প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ১৭ টাকা। আর খাদ্য বিভাগ কৃষকের কাছ থেকে শুকনা ও পরিষ্কার প্রতি কেজি ধান ক্রয় করছে ২৬ টাকা দামে।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, শরীয়তপুরে চলতি মৌসুমে ২৭ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। ওই জমিতে ধানের উৎপাদন হবে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫৪ মেট্রিক টন। গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেন। অন্যান্য মৌসুমে এক মাস সময়ের মধ্যে ধান কাটা শেষ হলেও এ বছর শ্রমিক সংকটে কিছুটা সময় বেশি লাগছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার ৭৪ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। আর আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাকি ২৬ শতাংশ ধান কাটা হয়ে যাবে।

এপ্রিল মাসের শেষের দিকে কৃষক ধান বিক্রির জন্য হাট-বাজারে আনতে শুরু করেন। তখন প্রতি কেজি ধান ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এরপর ধান পুরোদমে উঠতে শুরু করলে আর দাম বাড়েনি। গত ৩-৪ দিন আগে থেকে হাট-বাজারে ধানের দাম বাড়তে থাকে।

padi

সেচ, শ্রমিক ও সারের দাম বেশি থাকায় এ মৌসুমে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। প্রতি কেজি ধান উৎপাদন করতে কৃষকের ১৭ টাকা খরচ হয়েছে। তবে এ বছর শরীয়তপুর জেলায় ৭১৪ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করবে খাদ্য অধিদফতর। স্থানীয় খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ কৃষকের কাছ থেকে শুকনা ও পরিষ্কার ধান নেবে। যার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৬ টাকা।

জেলার বিভিন্ন হাটে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা ১৮ থেকে ২০ শতাংশ ভেজা ধান বিক্রি করছেন। ওই মানের প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে সাড়ে ১৬ টাকা দামে।

সদর উপজেলার দাদপুর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান সরদার চার বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। তিনি দুই বিঘা জমির ধান পরিবারের সারা বছরের খাবারের জন্য রেখে দেবেন। আর দুই বিঘা জমির ধান বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবেন।

বৃহস্পতিবার মিজানুর রহমান বিক্রির জন্য ৬০০ কেজি (১৫ মণ) ধান নিয়ে আংগারিয়া বাজারে এসছিলেন। তার ধানে ১৮ শতাংশর মতো আদ্রতা ছিল। প্রতি কেজি ধান বিক্রি করেছেন সাড়ে ১৬ টাকা হিসেবে প্রতিমন ৬৬০ টাকা দামে।

Paddy-price-1

মিজানুর রহমান বলেন, মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম আরও কম ছিল। কষ্ট করে চলেছি তবু তখন বিক্রি করিনি। এখন পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে বিক্রি করছি। এখন উৎপাদন খরচের কাছাকাছি দামে বিক্রি করছি।

নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর এলাকার কৃষক সুলতান শেখ বলেন, ১৫ দিন আগে শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করতে কিছু ধান বিক্রি করেছিলাম। তখন প্রতি কেজি ধান বিক্রি করেছি ১৩ টাকা দামে। শুক্রবার বিক্রি করলাম ১৬ টাকা দামে। আমার প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে খরচ হয়েছে সাড়ে ১৬ টাকা। এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। দুই-তিন মাস মজুত করে রাখতে পারলে ধানের দাম আরো বেশি পাওয়া যেত। কিন্তু এতো ধান মজুত করার মতো সমার্থ আমার নেই, তাই বাধ্য হয়ে বিক্রি করছি।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, শরীয়তপুরে এক লাখ ৫৮ হাজার ৭৫৪ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে। সরকারিভাবে ৭১৪ মেট্রিকটন ধান কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় শুরু হয়েছে। সরকারিভাবে আরো ১০ হাজার মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের চাহিদা দেয়া হয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কিছু দিন পর ধান বিক্রি করার জন্য। সামনে ধানের দাম আরো বৃদ্ধি পাবে।

ছগির হোসেন/এফএ/এমএস

আরও পড়ুন