চাঁদা না পেয়ে ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগ
১০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে মামুনুর রশিদ মামুন নামে এক ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের বড় ছেলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লবের বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনায় শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে মামুন বাদী হয়ে বিপ্লবকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি এজাহার (এসডিআর নম্বর-৭৯, ২৪.০৫.২০১৯) দাখিল করেছেন। মামুন মেসার্স রিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকার বাদশাহ মিয়ার ছেলে জুয়েল, আহসান উল্যার ছেলে আবদুল মান্নান, শামছুল হকের ছেলে কিরন, জামাল হোসেনের ছেলে তানিম, আবদুর রহিমের ছেলে হারুনুর রশিদ, পশ্চিম লক্ষ্মীপুরের কিসমত চৌধুরীর ছেলে পরান, স্টেডিয়াম রোডের শাহাদাত হোসেন খোকন ও অজ্ঞাত আরও ১২জন। তারা বিপ্লবের সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তাহেরপুত্র বিপ্লব অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তার ফাঁসির দণ্ড মওকুফ করেন। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিপ্লব কারামুক্ত হন। এরপর থেকে বাহিনী গঠন করে তিনি বিভিন্ন ঠিকাদার-ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায়সহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। গত বুধবার (২২ মে) রাতে ঈদের খরচের জন্য ১৪-১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিপ্লবের লোকজন ঠিকাদার মামুনের পৌরসভার সাহাপুর এলাকার বাড়িতে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় দাবি করা টাকা দিতে তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
পরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে লক্ষ্মীপুর শহরে যাওয়ার পথে মামুনের শার্টের কলার ধরে বিপ্লব ও আসামিরা তমিজ মার্কেট এলাকার পিংকি প্লাজার নিচে নিয়ে যান। এ সময় মাথায় পিস্তল ধরে বিপ্লব ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে মামুনের অভিযোগ।
টাকা দিতে অপারগতা জানালে তাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারা হয়। আসামি জুয়েল শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে মামুন সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।
ঠিকাদার মামুনুর রশিদ বলেন, আমার কাছে কারও কোনো টাকা পাওনা নেই। ঈদ খরচের জন্য বিপ্লব ১০ লাখ টাকা চাঁদা চান। এটি না দেয়ায় আমাকে মারধর করা হয়। বিষয়টি আমি এমপি, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
জানতে চাইলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লব বলেন, চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়। মামুনের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে। টেন্ডার সমন্বয়ের টাকা তার কাছে পাওনা। ওই টাকার জন্যই নেতাকর্মীরা তার বাড়িতে গিয়েছিল।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক যদি চাঁদা না দেয়ায় মারধরের শিকার হন, তাহলে সাধারণ মানুষ কেমন অবস্থায় আছেন? বিষয়টি আমি কেন্দ্রীয় নেতাদেরও জানাব।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাজল কায়েস/লক্ষ্মীপুর/এমএআর/পিআর