কক্সবাজারে নারীর রহস্যজনক মৃত্যু
কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালীর পশ্চিম ইছাখালী থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহটি উদ্ধারের পর এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়েপক্ষের লোকজন দাবি করছে, মারধরের পর মারা গেলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে নিজেই ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে ওই গৃহবধূ।
পুলিশও প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে এটি আত্মহত্যা। এরপরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের শাশুড়ি এবং এক ননদকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী রেজাউল করিম পলাতক রয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে বিকেল ৩টার দিকে মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মৃত গৃহবধূ তুফা মনি (২৩) সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম ইছাখালী (হাইস্কুলের পূর্ব-দক্ষিণ পাশ) এলাকার সিএনজিচালক রেজাউল করিমের স্ত্রী ও চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের খোনকার খিল এলাকার আইয়ুবুর রহমানের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তিন বছর আগে চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের খোনকার খিল এলাকার আইয়ুবুর রহমানের মেয়ে তুফা মনির সঙ্গে পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম ইছাখালী নজির আহমদের ছেলে সিএনজিচালক রেজাউল করিমের বিয়ে হয়। তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে সুখের সংসার হলেও গত কয়েকদিন আগে পারিবারিক কাজকর্ম নিয়ে কলহের জেরে মারধর করে স্বামী।
এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে মনোমালিন্য চলে আসছে। এরই জেরে সোমবার স্ত্রীকে আবারও মারধর করে রেজাউল। এরপরই ক্ষোভে, অভিমানে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে নিজ শয়নকক্ষে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে তুফা। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাকে উদ্ধার করে ঈদগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে তুফার বাবা আইয়ুবুর রহমান, চাচি রেহেনা বেগমসহ স্বজনরা দাবি করেন, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে শ্বশুর পক্ষের লোকজন।
খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহটি তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
সুরতহাল তৈরিকারী এসআই সনজিত চন্দ্র নাথ জানান, মৃতের শরীরে কোনো আঘাত চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গলায় একটা কাল চিহ্ন দেখা গেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে হত্যা না আত্মহত্যা জানা যাবে।
ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান খান বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা জানতে মৃতের শাশুড়ি ও ননদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সায়ীদ আলমগীর/বিএ