ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘জীবন বাঁচাতে নৌকার হাল ধরেছি’

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ১০:০২ পিএম, ১৮ মে ২০১৯

‘যখন শরীরে শক্তি ছিল কারখানায় কাজ করেছি। বেশি আয়ও করতে পেরেছি। এখন বয়স হয়েছে তাই আগের মতো আর শ্রম দিতে পারি না। এ কারণে খেয়াঘাটে নৌকার হাল ধরতে হয়েছে। সংসারে খাওয়ার লোক আছে ৭ জন। কিন্তু কাজের মানুষ আমি একাই।’ পুরো পরিবারের ভরণ পোষণে হিমশিম খেতে হচ্ছে ৭৫ বছর বয়সী মাঝি নুরুল ইসলামকে।

শনিবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে হৃদয়বিদারক কথাগুলো বলছিলেন বৃদ্ধ মাঝি মো. নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে, সংসার চালাতে নৌকার হাল ধরে খেয়ায় মানুষ পারাপার করছি। অনেক সময় জাহাজের নিচে যাত্রীসহ নৌকা পড়ে। সেই সময় শক্ত হাতে হাল ধরে নৌকা নিয়ন্ত্রণ করে নিজের এবং যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করি।’

সুগন্ধা, বিষখালী ও গাবখান নদীর মোহনা থেকে নদীটি উৎপত্তি হয়ে শহরের ভেতর থেকে কাঠপট্টি, আড়দ্দারপট্টি, পালবাড়ি, বাসন্ডা, নেছারাবাদ, পিপলিতা, চামটা হয়ে বাউকাঠি পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার নদীটি দৈর্ঘ্য। নদীর তীর বেদখলের কারণে পরবর্তী প্রবাহমান স্থান খালে রূপান্তর হয়েছে নদীটি।

বৃদ্ধ মাঝি বলেন, ‘প্রতি খেয়ায় ১০ জন করে মানুষ বহন করা সম্ভব কিন্তু সব সময় তো আর ১০ জন পাওয়া যায় না। প্রতি জনের খরচ ১ টাকা করে। তবে অনেকেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে একটু বেশি দেয় বিধায় বেঁচে আছি।’

শতভাগ হালাল উপার্জন করে রোজা রেখে নামাজ পড়ে শান্তি অনুভব করছেন বলেও জানান নুরুল ইসলাম।

ব্যবসায়ীদের পণ্য উঠা-নামা করানো কারণে প্রতিদিন শতাধিক জাহাজের চলাচল এ নদীতে। জাহাজ চলাচলের মধ্য দিয়েও কাঠপট্টি ট্রলার ঘাট থেকে বাসন্ডা ব্রিজ পর্যন্ত ৫টি খেয়া রয়েছে। এ নদীতে ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার করেন নৌকার মাঝিরা।

একটা সময় এই নদীবন্দর ইউরোপীয়ানদের আকর্ষণ করত। সে সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিলেন। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হয়। জেলাটি শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে বাসন্ডা নদী। ঝালকাঠির ব্যবসায়ীরা এখনও এ বাসন্ডা নদী থেকে জাহাজে করে পণ্য উঠা-নামা করেন।

মো. আতিকুর রহমান/এমআরএম/এমকেএইচ

আরও পড়ুন