মেডিকেল ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, আন্দোলনে সহপাঠীরা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) মেয়েদের হোস্টেলের সামনে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে ও ক্যাম্পাসে স্থায়ীভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ ১১ দফা দাবিতে দ্বিতীয়দিনের মতো আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রধান গেটসহ সব ক্লাসরুমে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িত ওই বহিরাগতকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।
বিষয়টি সমাধানে কলেজ প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বৈঠক চলছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সকাল থেকে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় এক ছাত্রী ইফতার কিনে হোস্টেলে ফিরছিলেন। এ সময় ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে এক যুবক জাপটে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। এ অবস্থায় ছাত্রী চিৎকার দিলেও কোনো নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া মেলেনি। এই সুযোগে ওই বখাটে পালিয়ে যায়। ওই সময় গেটে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিল না। বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই হোস্টেল সুপার নাহিদা আক্তারকে এবং কলেজ অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনকে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বললে ফুঁসে ওঠেন তারা।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রী হোস্টেলের দারোয়ান রাজাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মারধর করলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বহিরাগতকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই দিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবিরসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালান। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে কর্তব্যে অবহেলার দায়ে দুই নিরাপত্তা কর্মীকে বরখাস্ত করে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেন।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাদের দাবি দৃশ্যমান না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল থেকে বিক্ষাভ করেন তারা। এতে বন্ধ রয়েছে ক্লাস ও কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
এএম/এমকেএইচ