আটকের পর ইয়াবা উদ্ধারে গিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কারবারি নিহত
কক্সবাজারের টেকনাফে আটক ইয়াবা কারবারিকে নিয়ে ইয়াবার চালান গ্রহণ করতে গিয়ে বিজিবি ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তালিকাভুক্ত কারবারি নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা, দুইটি এলজি, ১২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও আট রাউন্ড খালি খোসা জব্দ করা হয়।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নাফ নদী সংলগ্ন বেড়িবাঁধের ৪ নম্বর স্লুইচ গেট এলাকার আচারবনিয়া লবণ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফয়সাল খান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত সিরাজ মিয়া (২৭) টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের আচারবনিয়া এলাকার ফজল আহমদের ছেলে।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফয়সাল খান বলেন, গত ১৪ মে রাতে ৫০ হাজার ইয়াবাসহ সিরাজকে আটক করা হয়। স্বীকারোক্তিতে সিরাজ জানায়, বুধবার রাতে নাফ নদী হয়ে লবণের মাঠ দিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা প্রবেশ করবে। এ তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৯টার দিকে ওই এলাকায় ইয়াবা উদ্ধারে গেলে ওতপেতে থাকা চোরাকারবারিরা বিজিবি ও পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে।
এ সময় পুলিশ ও বিজিবির দুইজন করে মোট চার সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি ও পুলিশ পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। অস্ত্রধারীদের সঙ্গে ৫ থেকে ৭ মিনিট গুলিবিনিময় হয়। একসময় চোরাকারবারিরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। গুলিবিদ্ধ সিরাজকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থা তার মৃত্যু হয়।
লে. কর্নেল মো. ফয়সাল খান বলেন, আহত দুই বিজিবির সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রানা মিয়াসহ পুলিশের অপর দুই সদস্য টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
তবে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, বুধবার রাতে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান আসার খবরে পুলিশের একটি দল নাফ নদীর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ৪ নম্বর স্লুইচ গেটে অবস্থান নেয়। পরে বিজিবির একটি টহলদলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় মিয়ানমারের দিক থেকে আসা একটি ট্রলার থেকে নেমে আসা কয়েকজন লোককে দেখতে পেয়ে থামার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা না থেমে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের দিকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানোর চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুড়ে। গোলাগুলি থেমে গেলে ঘটনাস্থলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরও বলেন, অভিযানের সময় ঘটনাস্থল তল্লালি করে একটি চাইনিজ পিস্তল, একটি দেশীয় বন্দুক, ৬৫টি গুলি ও ৫০ হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়।
ওসির মতে, সিরাজ মিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার একটি সংঘবদ্ধ ইয়াবাপাচার চক্র রয়েছে। ইয়াবার গডফাদার হিসেবে চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করতো সিরাজ। মাদক ব্যবসায় জড়িত অভিযোগে টেকনাফ থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
সায়ীদ আলমগীর/বিএ